বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

যৌন নিপীড়ন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ জরুরি

  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যৌন নিপীড়ন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ জরুরি

যৌন নিপীড়ন, নারী নির্যাতন কিংবা ধর্ষণসহ নানাবিধ ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এক্ষেত্রে বলা দরকার, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে তা অত্যন্ত ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। নারীর অগ্রগতি হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা বিস্তৃত হচ্ছে। কিন্তু যদি নারীর নিরাপত্তায় শঙ্কা থাকে তবে তা ভীতিপ্রদ। যা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই।

প্রসঙ্গত, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ওই ছাত্রীর স্কুলের এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা যায়, ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবার দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আমরা বলতে চাই, যখন ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত তারই শিক্ষক, তখন এরকম ঘটনার ভয়াবহতা অনুধাবন করা জরুরি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেছে, টিফিনের সময় স্কুল ভবনের চার তলায় ওঠার সময় সিঁড়িতে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। পরে অনেক চেষ্টা করে তার হাত থেকে ছাড়া পেয়ে স্কুলের বড় আপুদের সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দেন। বিচার তো দূরের কথা, উল্টো বাসায় এ ঘটনা না জানানোর অনুরোধ করে ছাত্রীকে ক্লাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়! আমরা মনে করি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, দোষী পার পেয়ে গেলে আরও বেশি অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে।

লক্ষণীয়, শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়ন বা হেনস্তার ঘটনা এই প্রথম নয়। সম্প্র্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের এক মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একজন অধ্যাপককে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া, এর আগেও ছাত্রী নিপীড়ন ও নানাবিধ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। অথচ শিক্ষক পিতৃতুল্য। শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে নিরাপদ থাকার কথা। ফলে, যদি শিক্ষকের বিরুদ্ধেই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে- তবে তার চেয়ে পরিতাপের আর কী হতে পারে! এই ধরনের ঘটনার মধ্য দিয়ে যে অবক্ষয়ের চিত্র স্পষ্ট হয় সেটাও আমলে নিতে হবে। সার্বিকভাবে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে কেউ যেন এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস করতে না পারে সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বিভিন্ন সময়ে নারী নির্যাতন, নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটছে। সভ্যতার অগ্রগতির সময়ে এই ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষকের দ্বারা এরকম ঘটনা ঘটলে তা যেমন লজ্জার তেমনি ভয়ানক। ফলে, এ ঘটনা আমলে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সর্বোপরি, শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষকের বিরুদ্ধেই যদি যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটে, তবে তার ভয়াবহতা এড়ানোর সুযোগ নেই। সামগ্রিকভাবে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে