জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি সুখকর নয়। টানা শীর্ষে থাকা রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত তথ্যও উদ্বেগজনক। আর বলার অপেক্ষা রাখে না, যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তার মধ্য অন্যতম হলো পরিবহণ। বিভিন্ন গবেষণায়ও উঠে এসেছে এই বিষয়টি। অন্যদিকে, যানবাহন থেকে সৃষ্ট দূষণ কমাতে বিভিন্ন সময় নেওয়া হয়েছে প্রকল্প। কিন্তু নানা জটিলতায় বাস্তবায়ন হয়নি। আটকে আছে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে। যখন আলোর মুখ দেখছে না জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো, তখন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের। জানা যায়, নতুন করে 'দ্য প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইকু্যইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং' নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। মূলত এটি একটি ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প। কিন্তু পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো নগরী দূষণের কারণ সবার জানা। এজন্য নতুন করে কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই দরকার নেই। মূল প্রকল্প বাস্তবায়ন দরকার। ফলে, এই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় নিতে হবে। কেননা, দূষণ রোধে যে কারণগুলো সামনে এসেছে সেগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম ঘনবসতিপূর্ণ নগরী ঢাকা ও চট্টগ্রাম। দেশের বৃহত্তম দুটি নগরীর দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী পরিবহণ। এসব পরিবহণ কী পরিমাণে দুই নগরীকে দূষণ করছে তা পরিমাপের জন্য প্রকল্পের আওতায় দুই শহরের সড়কের পাশে বসবে আধুনিক জাপানি প্রযুক্তি। প্রতিটি যন্ত্র জাপান থেকে আমদানি করে সড়কের পাশে বসানো হবে। একেকটি যন্ত্র কিনতে সরকারের খরচ হবে সাড়ে সাত কোটি টাকার ওপরে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, আধুনিক এ যন্ত্র ২৪ ঘণ্টা ডাটা সরবরাহ করবে। কোন পরিবহণ কী পরিমাণে দূষণ ছড়াচ্ছে, দূষণ রোধে সরকারের করণীয় বিষয়ও নির্ধারণ হবে এর মাধ্যমে। দূষণ রোধে পরিবহণ খাত পরিবর্তন ও আধুনিকতায় করণীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবে সরকার। এছাড়া পরিবহণ খাতে বড় আকারে বিনিয়োগও করতে চায় জাপান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাপানি প্রযুক্তি স্থাপনের পর এগুলো ১০ বছর সেবা দেবে বলে জানা যায়। এক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, বায়ুদূষণের কারণ বিভিন্ন সময়ই সামনে এসেছে। অন্যদিকে, পরিবহণসহ যেসব কারণে বায়ুদূষণ হচ্ছে তা রোধে পদক্ষেপ জরুরি। কিন্তু যখন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের চেয়ে মূল প্রকল্প বাস্তবায়ন বেশি দরকার বলে মতামত সামনে আসছে, সেটা বিবেচনায় নেওয়া দরকার। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প বিষয়ে পরিবহণ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক বলছেন, ঢাকা শহর প্রতিনিয়ত বিষাক্ত হচ্ছে এটা সবাই জানে। এর আগেও একই কাজে জাইকা প্রকল্প নিয়েছে। এখন এসব প্রকল্প নেওয়ার মানে নেই। শহরের দূষণ কেন হচ্ছে- সেটার সমাধান দরকার বলে জানান। আমরা মনে করি, যেসব কারণে নগর দূষিত হচ্ছে- সেগুলোর সমাধানে কাজ করতে সংশ্লিষ্টদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর আগেও প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে কিন্তু অনুমোদন হয়নি। মূলত আরও গভীরভাবে পরিকল্পনা ও অর্থায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় আটকে আছে এমন তথ্যও সামনে আসে। সর্বোপরি, মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশি অর্থ মিলছে না। কিন্তু সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ঠিকই মিলছে। অন্যদিকে, পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রকল্পর চেয়ে দূষণ রোধে মূল প্রকল্পর বাস্তবায়ন জরুরি। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক বিষয় কর্তৃপক্ষের ভাবতে হবে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বায়ুদূষণ রোধে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বায়ুদূষণের ভয়াবহতা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।