বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। মানুষ ক্রমশ এই ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠলেও, অনেক ক্রেতা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। টাকা পরিশোধ করেও পণ্য বা সেবা না পাওয়া, পরিশোধিত মূল্যের সমমানের পণ্য বা সেবা না পাওয়া ইত্যাদি অভিযোগ ক্রেতাদের কাছ থেকে আসছে। ডিজিটাল বাণিজ্য আইন, ২০২৩-এ ডিজিটাল বিজনেস আইডেন্টিটি (উইওউ) নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এখনো অনিবন্ধিত অনলাইন ব্যবসায়ীর সংখ্যা নিবন্ধিত ব্যবসায়ীর তুলনায় অনেক বেশি। যেখানে ইভ্যালির মতো বড় প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার সুযোগ পেয়েছে, সেখানে ছোট ছোট প্রতারকরা আরও সহজে হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অনলাইনে প্রতারিত হওয়া অনেক ক্রেতা আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান না, কারণ অল্প পরিমাণ টাকার জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়াটা বেশ ঝামেলার মনে হয়। যেমন, আমি গত ০১/০২/২০২৫ তারিখে একটি অনলাইন পেইজ থেকে একটি পণ্য অর্ডার করি এবং ২২৮ টাকা পেমেন্ট করার পরপরই সেই বিক্রেতা আমাকে ফেসবুকে বস্নক করে দেয়। ডিজিটাল বাণিজ্য আইন, ২০২৩-এ পণ্যের ট্র্যাকিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং মিথ্যা তথ্য প্রদানের শাস্তি ৩ বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড রাখা হয়েছে, তবু এর যথাযথ প্রয়োগ এখনো দৃশ্যমান নয়। এছাড়া, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য বা সেবা প্রদান না করলে মূল্যের তিনগুণ ক্ষতিপূরণ এবং অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে এসব বিধান কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
তাই, ই-কমার্স খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। ১. অনলাইন ব্যবসার নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা ২. প্রতারকদের দ্রম্নত আইনের আওতায় আনা ৩. অনলাইনে অভিযোগ জানানোর সুবিধা নিশ্চিত করা এবং দ্রম্নত বিচারপ্রক্রিয়া চালু করা। যদি এসব ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়, তাহলে ই-কমার্স খাত স্বচ্ছ ও নিরাপদ হবে, ক্রেতারা নির্ভয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবে, এবং প্রতারকদের দৌরাত্ম্য কমে যাবে।
মুরশিদ আলম
শিক্ষার্থী
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়