বাড়ছে না টু্যরিস্ট পুলিশের সক্ষমতা কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি
প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
দেশের অগ্রগতিতে পর্যটন খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। পৃথিবীর বহু দেশ পর্যটন খাতের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে বলা দরকার, বাংলাদেশের পর্যটন খাতের দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া জরুরি। কেননা, দেশে পর্যটকের পাশাপাশি এ খাতের পরিসর বাড়ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, নিরাপত্তাসহ নানা ধরনের সংকট বিদ্যমান। সংশ্লিষ্টদের এ খাতের গুরুত্ব অনুধাবন এবং নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয় আমলে নেওয়া দরকার।
তথ্য মতে, পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত টু্যরিস্ট পুলিশের সক্ষমতা সেভাবে বাড়ছে না। দেশের প্রায় দেড় হাজার পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে টু্যরিস্ট পুলিশ কাজ করছে মাত্র ১৩০টি স্পটে। এমন পরিস্থিতিতে, যেসব পর্যটন কেন্দ্রে টু্যরিস্ট পুলিশ নেই, সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, পর্যটকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আর নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ থাকলে পর্যটক ঘাটতি থেকে শুরু করে এ খাতের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। যা কাম্য নয়। এই খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিদায়ী বছর পর্যটন কেন্দ্রে বিভিন্ন অপরাধ মোকাবিলা করেছে টু্যরিস্ট পুলিশ। কিন্তু কম জনবল নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে এই সংস্থা। উলেস্নখ্য, পর্যটনশিল্পে গতি আনতে ২০১৩ সালের নভেম্বরে গঠিত হয় টু্যরিস্ট পুলিশ। পুলিশের বিশেষায়িত এই ইউনিটের সব তৎপরতাই পর্যটকদের কেন্দ্র করে। বিশেষ করে এই বাহিনীর প্রধান কাজ স্পটগুলোতে ফিজিক্যাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করা; একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখা। পরিবেশ আইনের যে বিধিবিধান আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে সাপোর্ট ফোর্স হিসেবে কাজ করা। কিন্তু যদি পর্যাপ্ত টু্যরিস্ট পুলিশ না থাকে তবে সামগ্রিকভাবে পর্যটন খাতের বিকাশই বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। যা এড়ানোর সুযোগ নেই।
জানা যায়, দেশে ছোট-বড় সব মিলিয়ে দেড় হাজারের বেশি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এক হাজার ৩৯৪ জনবল নিয়ে ৩২ জেলায় ১৩০টি স্পটে কাজ করছে টু্যরিস্ট পুলিশ। এ ছাড়া হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল সেন্টার থেকেও সেবা দেন এই বাহিনীর সদস্যরা। ২০২৪ সালে বিভিন্ন স্পটে পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রায় ৬৩ হাজার টহল দিয়েছে টু্যরিস্ট পুলিশ। আর সংকট বলতে পর্যটন বা পর্যটক সম্পর্কিত পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকা, টু্যরিস্ট পুলিশকে একজন টু্যর গাইড হওয়াসহ নানা বিষয় সামনে এসেছে- যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
আমরা মনে করি, টু্যরিস্ট পুলিশের মনোবল এবং সেবা বাড়াতে বিভিন্ন লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করা, জনবল বাড়ানো, অবকাঠামো নির্মাণ, আধুনিক প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় নিতে হবে। দেশের টপর্যটন খাত সম্ভাবনাময়। আর পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে হলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা সবচেয়ে জরুরি। কেননা, নিরাপত্তা না থাকলে সেখানে পর্যটক যেতে চাইবেন না। ফলে, অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া, বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং বাংলাদেশে ভ্রমণে আগ্রহী করতেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
সর্বোপরি, বিপুল সম্ভাবনাময় দেশের পর্যটন খাতের পরিসর বাড়ছে। এ খাতের উন্নয়নে বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা দূরীকরণে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। টু্যরিস্ট পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পর্যটকদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত।