মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
স্মরণীয়-বরণীয়

চার্লস ডিকেন্স

  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চার্লস ডিকেন্স
চার্লস ডিকেন্স

চার্লস জন হাফ্যাম ডিকেন্স (৭ ফেব্রম্নয়ারি, ১৮১২-৯ জুন, ১৮৭০) ছিলেন ঊনবিংশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইংরেজ ঔপন্যাসিক। তাকে ভিক্টোরিয়ান যুগের শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক হিসেবে মনে করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক, সম্পাদক, সচিত্র প্রতিবেদক এবং সমালোচক ছিলেন। তবে, চার্লস ডিকেন্সকে ইতিহাস মনে রাখবে তার অসাধারণ লেখনীর জন্য। 'অলিভার টুইস্ট', 'অ্যা ক্রিস্টমাস ক্যারল', 'নিকোলাস নিকলবি', 'ডেভিড কপারফিল্ড', 'অ্যা টেল অব টু সিটিস' এবং 'গ্রেট এক্সপেকটেশন'-এর মতো কালজয়ী উপন্যাসের রচয়িতা ডিকেন্সকে ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ডিকেন্স জীবদ্দশাতেই তার পূর্বসূরি লেখকদের তুলনায় অনেক বেশি জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মৃতু্যর পরও তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ন থাকে। তার প্রধান কারণ হচ্ছে, ডিকেন্স ইংরেজি সাহিত্যে প্রবাদপ্রতিম বেশ কয়েকটি উপন্যাস ও চরিত্র সৃষ্টি করেছিলেন। ডিকেন্সের অধিকাংশ রচনাই পত্রপত্রিকায় মাসিক কিস্তিতে প্রকাশিত হতো। এই পদ্ধতিতে রচনা প্রকাশকে জনপ্রিয় করে তোলার পেছনেও ডিকেন্সের কিছু অবদান আছে। অন্যান্য লেখকরা ধারাবাহিক কিস্তি প্রকাশের আগেই উপন্যাস শেষ করতেন, কিন্তু ডিকেন্স কিস্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী অধ্যায়গুলো রচনা করে যেতেন। এই পদ্ধতিতে উপন্যাস রচনার ফলে তার উপন্যাসগুলোর গল্পে একটি বিশেষ ছন্দ দেখা যেত। অধ্যায়গুলোর শেষটুকু হতো রহস্যময়- যার জন্য পাঠকরা পরবর্তী কিস্তিটি পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকত। তার গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাসগুলো এতই জনপ্রিয় যে, এগুলো কখনই আউট-অব-প্রিন্ট হয়ে যায়নি। লিও টলস্টয়, জর্জ অরওয়েল, জি কে চেস্টারটন প্রমুখ লেখকরা ডিকেন্সের রচনার বাস্তবতাবোধ, রসবোধ, গদ্যসৌকর্য, চরিত্রচিত্রণের দক্ষতা ও সমাজ-সংস্কার চেতনার উচ্চ প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, হেনরি জেমস, ভার্জিনিয়া উল্‌?ফ প্রমুখ লেখক ডিকেন্সের রচনার বিরুদ্ধে ভাবপ্রবণতা ও অবাস্তব কল্পনার অভিযোগ এনেছেন। ডিকেন্সের জন্ম ১৮১২ সালের ৭ ফেব্রম্নয়ারি ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ শহরে। বাবা জন ডিকেন্স এবং মা এলিজাবেথ বারো এর আট সন্তানের সংসারে চার্লস দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। ডিকেন্সরা পারিবারিক দিক থেকে অসচ্ছল ছিলেন। ১৮২২ সালে লন্ডনে স্থানান্তরিত হন তারা। চার্লস ডিকেন্সের শৈশবটুকু লন্ডনেই কাটে। ১৫ বছর বয়সে ডিকেন্স শিক্ষাজীবনে ইতি টানেন। অফিসের পিয়ন হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এখানে কর্মরত অবস্থায় ডিকেন্সের সাহিত্যিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটে। ১৮৩২ সালে চার্লস ডিকেন্স পিয়নের কাজ ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করা শুরু করেন। লন্ডনের বিভিন্ন পত্রিকায় ছবি স্কেচ করা শুরু করেন তিনি। ফাঁকে ফাঁকে দু'চার পাতা লিখতেও থাকেন। ১৮৭০ সালের ৯ জুন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ৫৮ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে