মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
পাঠক মত

বৃক্ষনিধন বনাম উন্নয়ন ভারসাম্য কোথায়?

জাফরিন সুলতানা
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বৃক্ষনিধন বনাম উন্নয়ন ভারসাম্য কোথায়?

উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কাটা আমাদের দেশের পরিবেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক নির্মাণ, শিল্পায়ন, নগর সম্প্র্রসারণ ও বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য প্রতিদিন অসংখ্য গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। যদিও উন্নয়ন দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য, তবে এর জন্য প্রকৃতিকে ধ্বংস করা হলে দীর্ঘমেয়াদে আমরা ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়ব।বৃক্ষনিধনের ফলে জলবাযু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব আরও তীব্র হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা, বায়ুদূষণ এবং প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংসের মতো সমস্যাগুলো দিন দিন প্রকট হচ্ছে। শহরাঞ্চলে বৃক্ষনিধনের ফলে তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে উঠছে, বৃষ্টির পানি সহজে শোষিত না হওয়ায় জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া, বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে উন্নয়নের প্রয়োজনও উপেক্ষা করা যায় না। নতুন রাস্তা, শিল্প কারখানা, আবাসন প্রকল্প অবশ্যই দরকার, কিন্তু তা হতে হবে পরিকল্পিতভাবে। আমাদের এমন উন্নয়ন মডেল গ্রহণ করতে হবে, যেখানে পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। উদাহরণস্বরূপ, উন্নয়ন প্রকল্প শুরুর আগে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং যেখানে গাছ কাটতে হবে, সেখানে সমান বা দ্বিগুণ সংখ্যক গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, ব্যক্তিগত ও সামাজিক উদ্যোগও জরুরি। স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালত, শিল্প কারখানার আশেপাশে বেশি করে গাছ লাগানো এবং সংরক্ষণ করা দরকার। পাশাপাশি, যারা অবৈধভাবে বন উজাড় করছে বা অপরিকল্পিতভাবে গাছ কেটে ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রকৃতি ধ্বংস করে কখনোই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়ন ও পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ন, পুনর্বনায়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার, পরিবেশবিদ ও সাধারণ নাগরিক্তসবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই কেবল এই ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হোক, যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি বাসযোগ্য পৃথিবী পায়।

জাফরিন সুলতানা

শিক্ষার্থী

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে