আবারও দুর্ঘটনায় মৃতু্য সড়ক নিরাপদ করতে হবে
প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
থামছে না সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় মৃতু্য। প্রতিনিয়ত যখন সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর খবর জানা যায়- তখন তা কতটা উদ্বেগজনক তা সহজেই অনুমান করা যায়। ঘাতক চাকার নিচে একের পর এক মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে- এই পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা অনুধাবন করাও জরুরি। সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, রংপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৪ জন। শুক্রবার সকালে নগরের সাতমাথা চায়না হল এলাকায় কুড়িগ্রামগামী একটি বাস ও তিন চাকার মহেন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন, জেলার পীরগঞ্জে দুই বাসের সংঘর্ষে একজন এবং নন্দীগ্রামে দুই ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হন। এছাড়া, এদিন কুষ্টিয়া, চাঁদপুর, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ৭ জন নিহত হয়েছেন।
যেভাবে একের পর এক সড়কে মানুষের মৃতু্য হচ্ছে তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে সড়ক নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাও জানা যায়; দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় বেশিরভাগই মোটর সাইকেল, নসিমন-করিমন ও ইজিবাইকের কারণেই সংঘটিত হয়। এছাড়া, চাঁদাবাজির হাতবদল হয়েছে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন সড়কে চলছে, আইনের অপপ্রয়োগ চলছে, বিআরটিএ রাজস্ব আদায়ে ব্যস্ত, ট্রাফিক বিভাগ জরিমানা আদায়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার যাবতীয় উপাদান সড়কে বিছিয়ে রাখা হয়েছে- এসবও আলোচনায় এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করা।
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত বছরে সড়কের যে চিত্র উঠে এসেছে তা ভীতিকর। গত বছর বিভিন্ন যানবাহনের দুর্ঘটনায় সড়কে প্রাণ গেছে ৮ হাজার ৫৪৩ জনের। এতে স্পষ্ট হয় যে, সড়ক কতটা অনিরাপদ। এর আগেও নানা সময় সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে তাও আমলে নেওয়া দরকার। এমন আলোচনা সামনে এসেছে, বিপজ্জনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমেই বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা মহাসড়কে নেমে আসা, গুরুত্বপূর্ণ জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই ঝুঁকির বিষয়গুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। কেন সড়ক নিরাপদ হচ্ছে না- এই বিষয়কে সামনে রেখে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতায়াত সহজ হলেও যদি যাত্রা নিরাপদ না হয় তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার অগ্রগতি সুফল বয়ে আনবে না। সঙ্গত কারণে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথার্থ বাস্তবায়ন জরুরি।
সর্বোপরি বলতে চাই, সড়কে যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে যেন সড়ক মৃতু্য-ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাই, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনা সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, নানা প্রতিশ্রম্নতি সত্ত্বেও সড়ক নিরাপদ হয়নি। প্রতিনিয়ত দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে- যা কাম্য হতে পারে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে, সড়ক নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।