গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃতু্য সঠিক উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশের বহু মানুষের মৃতু্য হয়েছে। ঢাকার মিরপুরে রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে লাগা আগুনে দুই পরিবারের সাতজন দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় রুমা নামের এক নারী মারা গেছেন। এর আগে মারা যান তার স্বামী খলিল। ৩২ বছর বয়সি রুমার শরীরের ২০ শতাংশ পুড়েছিল। গত রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের ১১ নম্বর সেকশনের সি-বস্নকের এক বাসায় আগুনের ঘটনায় খলিল, তার স্ত্রী ও তিন শিশুসহ ৭ জন দগ্ধ হয়। এর আগে ঢাকার ধামরাই উপজেলার একটি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার সময় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চালক নিহত হয়। এর আগে ময়মনসিংহ নগরীতে বেলুন ফোলানোয় ব্যবহৃত গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ ১২ জন দগ্ধ হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি টিনের চালা উড়ে যায়। বাংলাদেশে এখন কারো নিরাপত্তা নেই। যাদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তারা ছিল চরম উদাসীন। এক দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই আরেক দুর্ঘটনা এসে হাজির হয়। আমরা বেদনাগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই দেশের বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানীং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। বেশ কিছু দিন আগে সিলেটের গোয়াইনঘাটে বসতঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মা-মেয়ে নিহত ও একই পরিবারের চার সদস্য দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া, ঢাকার ধামরাইয়ে বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃতু্য আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। কিছুদিন আগে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের প্রকৃত সংখ্যা, হতাহত ও দগ্ধদের তথ্য সংরক্ষণ করতে বিশেষ ডাটাবেজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ডাটাবেজ তৈরিতে সহায়তা করার অনুরোধ করা হয়েছে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তদন্তকারী সংস্থাগুলোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। মূলত সচেতনতার অভাবেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা। বিস্ফোরণের ঘটনা বাড়ায় স্বাভাবিক কারণেই বেড়েছে হতাহত ও পঙ্গুত্বের হার। পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি, গ্যাস লাইন বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত মৃতু্যর ঘটনা ঘটত না। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাস লাইনের ত্রম্নটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। বছরে গড়ে ৫ থেকে ৬টি বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও, ছোটখাটো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। গ্যাস সিলিন্ডার যথাযথভাবে পরিবহণ, মজুত ও ব্যবহার না করা এবং ত্রম্নটিপূর্ণ গ্যাস ভালভের কারণেও গ্যাস বেরিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এ জন্য অবশ্যই গ্যাস সিলিন্ডার, রেগুলেটর, কোম্পানির সিল, সেফটি ক্যাপ, পাইপ ও রাবারের রিং অনুমোদিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে হবে। সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা পরীক্ষা করতে হবে। ব্যক্তির সচেতনতাই পারে দুর্ঘটনার পরিমাণ কমিয়ে আনতে। এক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ জরুরি।