আলুর কেজি ৮০ টাকা
নিয়ন্ত্রণহীন বাজার
প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
বাজারে এখন নতুন আলুর সরবরাহ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরনো আলুর সরবরাহও পর্যাপ্ত। এরপরও দাম বাড়ছে। রাজধানীর বাজারে দাম বেড়ে পুরানো আলুর কেজি এখন ৭৫ টাকা ছাড়িয়ে ৮০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম পুরানো আলুর দাম কেজিতে ৮০ টাকা হলো। এক বছর আগে ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর বাজারে আলুর কেজিপ্রতি মূল্য ছিল ৪৫ টাকার মধ্যে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের একই সময় দেশে আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ৫০ টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত মজুতদারদের কারসাজির কারণেই এবার আলুর দামের এমন অবস্থা। কোনো কারণ ছাড়াই তারা আলুর দাম বাড়াচ্ছে। কৃষক পর্যায় থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুত করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দুদিন আগের বাজার দরের তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আলুর দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ কোল্ড স্টোরেজে রাখা আলুর দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। আমদানি করলেও কোনোভাবেই ৪০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। কিন্তু ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা আঁতাত করে এবার দাম বেশি বাড়িয়ে দিয়েছেন।
নিত্যপণ্যের চড়া দামে গত তিন বছর ধরে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সেই অবস্থার এখনো কোনো উন্নতি হয়নি। বরং দাম আরও বেড়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালীদের সিন্ডেকেট যেখানে নেই সেখানেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নেই। যেমন আলুর কথাই ধরা যেতে পারে। আলু প্রতিটি পরিবারের জন্যই অপরিহার্য। উৎপাদনও হয় চাহিদার চেয়ে বেশি। এর আগে ভারত থেকে আলু আমদানি করার পরও আলুর দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখনো বলা হয়েছিল, হিমাগার ও মজুতদারদের কারসাজিতে বাজারে এ অস্বাভাবিক দাম। এবারও একই কথা বলা হচ্ছে। দামের এ অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বিপাকে ভোক্তারা। চালের দামের চেয়ে আলুর দাম এখন বেশি।
ভাতের বিকল্প হিসেবে আলুর কথা এক সময় খুব ভাবা হতো। বলা হতো, 'ভাতের পরিবর্তে আলু খান ভাতের ওপর চাপ কমান।' খাদ্যমান ও পুষ্টিগুণের দিক থেকে আলুর কদর অনেক। আলুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বহাইড্রেড রয়েছে। আলুর সাহায্যে নানা ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। তরকারিতে আলু একটি অপরিহার্য উপাদান। এছাড়া, আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে সপ্তম। এ সাফল্য বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে আলু উৎপাদনকারী শীর্ষ ১০ দেশের কাতারে। স্বীকৃতিটি দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। এই ধরনের সংবাদ আমাদের আশাবাদী করে তোলে। তারপরেও আলুর দাম বেড়েই চলেছে। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগ জরুরি।