শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

শনাক্ত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী কার্যকর উদ্যোগ নিন

  ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শনাক্ত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী কার্যকর উদ্যোগ নিন

ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। এক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, গত তিন মাসে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। ফলে, যখন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তথ্য সামনে আসছে, তখন তা আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রাখাও জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। বলা দরকার, গত বছরও পাঁচজন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত বলেও জানা যাচ্ছে। উলেস্নখ্য, বুধবার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক জিকা ভাইরারস আক্রান্ত রোগীর তথ্যর বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। বলা দরকার, গত তিন মাসে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া সবাই স্থানীয়ভাবেই এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের তেমন কোনো শারীরিক জটিলতা ছিল না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয়, গবেষকরা বলছেন, জিকার পাশাপাশি ঢাকা শহরে এখন চিকুনগুনিয়ায় অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অর্থ ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া- এই তিন রোগে ঢাকা শহরের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন- যা এড়ানো যাবে না। এছাড়া, এটাও মনে রাখা জরুরি যে, এই রোগ তিনটি ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। ফলে, মশা নিধন কার্যক্রম এবং জনসচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখার বিকল্প থাকতে পারে না।

প্রসঙ্গত, আইইডিসিআর জানিয়েছে, জিকায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, জ্বর ও ব্যথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। এছাড়া, রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কাছের সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করাতে হবে। মূলত জিকা ভাইরাস এইডিস মশাবাহিত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর, হাল্কা মাথাব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা, কনজাংটিভাইটিস, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, শরীরে লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি ওঠার মতো উপসর্গ দেখা যায়। জানা যায়, জিকা ভাইরাসের দুটি ধরন- আফ্রিকান এবং এশিয়ান। ঢাকায় পাওয়া জিকা ভাইরাস আক্রান্তরা এশিয়ান ধরনে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এছাড়া, বাংলাদেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক জানিয়েছেন 'ঝুঁকি এই মুহূর্তে নেই। ভবিষ্যতে এই রোগটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। জিবিএস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে গর্ভবতী মায়েরা। এখানে যে স্ট্রেইন পাওয়া গেছে সেটা এমন হবে কিনা তা পরীক্ষা না করে বলা যাবে না।' ফলে আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

বলা দরকার, এর আগে গত বছর ৫ জন জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তারাও ঢাকার রোগী ছিলেন। আইসিডিডিআর,বির একটি গবেষণায় ওই পাঁচজনের জিকা ভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি ধরা পড়ে। অন্যদিকে, জানা যায়, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত ৩৯৯ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়। এদের মধ্যে ১৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫ জনের পজিটিভ আসে। এটাও লক্ষণীয় 'আক্রান্তরা সবাই সুস্থ আছেন, কোনো সমস্যা হয়নি। তাদের কারও বাইরে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। তার মানে সংক্রমণটা দেশের ভেতরেই হয়েছে।' এমনটিও খবরের মাধ্যমে জানা গেছে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, গত তিন মাসে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা গেছে- ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাথ বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে। এছাড়া, যেহেতু এটিও এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ফলে, মশা নিধন কার্যক্রম এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা অপরিহার্য। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, যথাযথভাবে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে