অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রম্নতি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে
প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, তেমনিভাবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটি নিশ্চিত করারও কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, 'অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য' নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। তিনি বলেছেন, 'সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এই জাতিকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেব।' আমরা মনে করি, এই প্রতিশ্রম্নতির যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। উলেস্নখ্য, রোববার শপথ গ্রহণ শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হওয়ার সময় মূল ভবনের প্রবেশপথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এটাও বলা দরকার, তিনি শপথের সম্মানটা রাখার প্রতি দৃঢ়তা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে উলেস্নখ করেন দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচনের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছে। অনেক আন্দোলন করেছে বিগত বছরগুলোয় এবং অনেকে রক্ত দিয়েছে। আর একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি ব্যক্ত করে তার জন্য সর্বোচ্চটুকু করার বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া, লক্ষণীয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে কেউ সংস্কার শেষে নির্বাচন চাচ্ছে, আবার কেউ দ্রম্নত নির্বাচন চাচ্ছে- এ সংক্রান্ত আলোচনা সামনে এসেছে। সিইসি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। একটা নির্বাচন করতে গেলে কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার তো লাগবেই। এয়াড়া, তিনি উলেস্নখ করেন 'এখন নানারকম কথা হচ্ছে।' কেউ প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন, আবার কেউ বলে আগের সিস্টেমে ইলেকশন। এই দিকটিও উলেস্নখ করেন যে, সংবিধানে যদি এটা ফয়সালা না হয়, আমরা নির্বাচনটা করব কীভাবে? ফলে, সার্বিক বিষয় আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটি নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।
উলেস্নখ্য, সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান এ এম এম নাসির উদ্দীন। বিসিএস ১৯৭৯ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। মূলত সার্চ কমিটির প্রস্তাব করা নামের তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বেছে নেন। এটা বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা তিনি করবেন। এছাড়া, এ দায়িত্ব যখন আসছে, তা সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে- সবার সহযোগিতা নিয়ে এমন দৃঢ়তাও ব্যক্ত করেন। আমরা মনে করি, তিনি যখন 'অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য' নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন এটি আশাব্যঞ্জক- যা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।
আমলে নেওয়া দরকার, সিইসি বলেছেন, 'সবাই মিলে, আপনাদের সবার সহযোগিতা নিয়েই কিন্তু (নির্বাচন) করতে হবে। আমরা একা পারব না। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। দেশবাসীর সহযোগিতা লাগবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা লাগবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এই জাতিকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেব। এছাড়া, নির্বাচন করতে গেলে নতুন প্রজন্ম, যারা ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে বছরের পর বছর, তাদের তো ভোটার তালিকায় আনতে হবে। ভোটার তালিকা করতে হবে। ...কোথায় কোথায় সংস্কার দরকার হবে, ইন্টারভেনশন দরকার হবে, সেটি পাব, যেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটা কমিশন কাজ করছে। পরামর্শ আসুক, আমরা দেখি কোনটা কোনটা গ্রহণযোগ্য হয়- এসব বিষয় উলেস্নখ করে জানিয়েছে, যেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, গণতন্ত্র সমুন্নত থাকে। স্মর্তব্য, এর আগে বিভিন্ন সময়ে ভোটকে কেন্দ্র করে পেশিশক্তি, অস্ত্রের ব্যবহারসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে নতুন নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবেন এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।