বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমাদের মনোভাব

তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তার একটি পস্ন্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করছে। এর নেতিবাচক দিকগুলো আমাদের পরিহার করতে হবে। নিতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল। সেদিকেই আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত।

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ফারজানা ইসলাম
নজিরবিহীন উন্নতি হয়েছে যোগাযোগ প্রযুক্তিতে। এই উন্নতির ফলে গোটা বিশ্ব আজ একটি একক গ্রামে পরিণত হয়েছে। যোগাযোগ প্রযুক্তি দূরকে এনে দিয়েছে চোখের কাছে। এরই পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধ্যকে করেছে সাধন। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিশ্বের সর্বপ্রকার উন্নয়ন কর্মকান্ডের মূল হাতিয়ার। যে জাতি ডিজিটাল প্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। বর্তমান আধুনিক শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হওয়ার পাশাপাশি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব দরবারে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। এর মূল কারণ আধুনিক এই শতাব্দীর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ দুই-ই আবর্তিত হচ্ছে এই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘিরেই। বিশ্বগ্রামের ফলে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এবং দ্রম্নত যোগাযোগের সুবিধার মাধ্যমে পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। আমরা এখন অতি অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর কোথায় কী ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব অতীতের তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমান যুগে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা যেন একটি সাধারণ প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া একটি শক্তিশালী পস্ন্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষ তাদের চিন্তাধারা, সৃজনশীলতা এবং অভিজ্ঞতাকে সহজে শেয়ার করতে পারে। এমনকি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং অন্যান্য পস্ন্যাটফর্মে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ নতুন কন্টেন্ট তৈরি করছেন। যার ফলে, ভাইরাল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ প্রবণতা হয়ে ওঠেছে। এই প্রবণতা ভালো নয়। আবার ভুল তথ্যের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব এবং বিভাজনেরও সৃষ্টি হতে পারে। এই একটি ভুল তথ্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক অশান্তি এবং অসহিষ্ণুতা বাড়ায়। আবার বহু তরুণ ভাইরাল হওয়ার মাধ্যমে অস্থায়ী খ্যাতি অর্জন করলেও তারা তা স্থায়ী সাফল্যের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু পরে যখন তাদের সেই খ্যাতি হারিয়ে যায় তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে, যা তাদের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে। ভাইরাল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা একটি উত্তেজনাপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া হলেও এর পেছনে লুকিয়ে আছে বহু নেতিবাচক দিক- যা মানসিক চাপ ও সামাজিক সমস্যাও সৃষ্টি করে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে- যাতে তারা নিরাপদে এবং সুস্থভাবে নিজেদের প্রতিভা ও সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ পায়। তাই ভাইরাল হওয়ার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সত্যিকার অর্থে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া। পৃথিবীব্যাপী স্বল্প সময়ে এই যোগাযোগ সুবিধার ফলেই বিশ্বকে একটি গ্রাম হিসেবে তুলনা করা যাচ্ছে। এজন্য বর্তমান বিশ্বকে গেস্নাবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম বলা হয়। বিশ্বায়নের এই যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিই হলো উন্নয়নের মূল হাতিয়ার। বিশ্বায়ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই হাতিয়ারের মাধ্যমে সামগ্রিক কমিউনিটির মধ্যে সব মানুষকে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া সহজ থেকে সহজতর হয়েছে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির এই হাতিয়ারের মাধ্যমে বিশ্বায়ন হয়েছে বিশ্বব্যাপী সামাজিক সম্পর্কের নিবিড়করণ প্রক্রিয়া। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার দ্বারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সহজেই তাদের চিন্তাচেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করার পাশাপাশি একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। বিশ্বগ্রাম সৃষ্টির প্রধান কারণ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্ময়কর বিকাশ। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব অতীতের তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া একটি শক্তিশালী পস্ন্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষ তাদের চিন্তাধারা, সৃজনশীলতা এবং অভিজ্ঞতাকে সহজে শেয়ার করতে পারে। এমনকি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং অন্যান্য পস্ন্যাটফর্মে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ নতুন কন্টেন্ট তৈরি করছেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তার একটি পস্ন্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করছে। এর নেতিবাচক দিকগুলো আমাদের পরিহার করতে হবে। নিতে হবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল। সেদিকেই আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত। ফারজানা ইসলাম :কবি ও সামাজিক উদ্যোক্তা