ভিসা জটিলতা

দূর করতে হবে

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ভিসা নিয়ে ভারতের বিধিনিষেধে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দেশটিতে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এর ফলে, 'ভ্রমণ কর' বাবদ রাজস্ব আদায় অর্ধেক হয়ে গেছে। বড় ধরনের ধস নেমেছে স্থানীয় ব্যবসাবাণিজ্যে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, আগে এ বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন সাত থেকে নয় হাজার যাত্রী পারাপার হতো, ভ্রমণ কর থেকে প্রতিমাসে রাজস্ব আয় হতো গড়ে ১৫ কোটি টাকার। কিন্তু ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে প্রতিদিন যাত্রী পারাপার নেমেছে পাঁচ হাজারে। আর বর্তমানে রাজস্ব আদায় হচ্ছে মাসে আট কোটি টাকা। স্থলপথে দেশের সবচাইতে বড় আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল থেকে ভারতের কলকাতার দূরত্ব ৮৪ কিলোমিটার। দূরত্ব কম ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় স্থলপথের অধিকাংশ যাত্রীই এ চেকপোস্ট দিয়ে ভারত যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আর ভারত-বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের যাতায়াতকারী এই মানুষের সহযোগিতার জন্য বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় গড়ে উঠেছে নানা প্রতিষ্ঠান। মানিচেঞ্জার থেকে শুরু করে দূরপালস্নার পরিবহণ কাউন্টার, টু্যর গাইড, ভিসা সহায়তা কেন্দ্র, বাস-ট্রেন-পেস্ননের টিকিট বুকিং এজেন্সি এবং হোটেল, রেস্তোরাঁসহ ছোটখাটো এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাবাণিজ্য পুরোপুরিই চেকপোস্ট ব্যবহারকারী যাত্রীদের ওপর নির্ভরশীল। এখন যাত্রী কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোও চরম দুঃসময় পাড় করছে। বড় ধাক্কা লেগেছে তাদের ব্যবসায়। আগে যেখানে প্রতিদিন বেনাপোল থেকে দেড়শ দূরপালস্নার বাস বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেত। এখন সেখানে ২০ থেকে ৩০টা বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তারপরও অধিকাংশ বাসই খালি যাচ্ছে। ভারতীয় 'ভ্রমণ ভিসা' প্রদান শুরু না হলে খুব শিগগিরি পরিবহণ ব্যবসা বেনাপোল থেকে গুটিয়ে নিতে হবে এমন মন্তব্য করেছেন পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। একই অবস্থা এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসায়ী ও মানিএক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীদের। বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর অনেক ব্যবসায়ী একেবারেই হাতগুটিয়ে বসে আছেন। রোজগার না হওয়ায় অফিস খরচ, নিজেদের হাত খরচ, কর্মচারী বেতন কোনোটাই তারা চালাতে পারছেন না। এখন যারা যাতায়াত করছেন, তাদের অধিকাংশই আগস্টের আগেই ভিসা পাওয়া যাত্রী। নতুন করে টুরিস্ট ভিসা চালু না করলে আগামী এক মাসের মাসের মধ্যে দু'দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার শূন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে অনেকেরই ধারণা। এমন পরিস্থিতি কেবল বাংলাদেশেরই নয়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভারতে বাংলাদেশ থেকে যারা ভ্রমণে বা চিকিৎসা করাতে যেতেন, তাদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসায়, ভারতের পরিবহণ ও হোটেল ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। ভারতের হাসপাতাল, ডাক্তার এমন কি রেস্টুরেন্টগুলোও বিপাকে পড়েছে। আমরা আশা করছি, প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে ভারত ভিসা জটিলতা দূর করতে সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।