শিশু নির্যাতন ও হত্যা কঠোর পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
যতই দিন যাচ্ছে, সমাজে শিশু নির্যাতনের হার বাড়ছে। কেবল নির্যাতনই নয়, শিশুহত্যার সংখ্যাও বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। চলতি বছরের ১০ মাসে (জানুয়ারি থেকে অক্টোবর) শারীরিক নির্যাতন, সহিংসতা, ধর্ষণ, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে নিহত হয়েছে মোট ৪৮২ জন শিশু। ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাসে নিহত শিশুর সংখ্যা ছিল ৪২১ জন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে শিশু হত্যা বেড়েছে ৬১ জন। এছাড়াও চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৮০ জন শিশু। তবে, ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাসে এর সংখ্যা ছিল ৯২০ জন। এর ফলে, দেখা যায়, চলতি বছরে শিশু নির্যাতন অনেক কমেছে। ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংলাপে এ তথ্য উঠে আসে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টেরি ডেস হোমসের কান্ট্রি ডিরেক্টর এম কবিরের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রজেক্ট অফিসার শান্তা ইসলাম। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ (সিআরএসিবি) যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
এটা সত্য, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ শিশু অধিকার রক্ষায় বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও শিশুদের পরিস্থিতি আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জন করেনি- কেন না, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ঘটেনি। এসব পদক্ষেপের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতা অনুপস্থিত। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নানামুখী সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত দিনের সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে আশাবাদ জাগ্রত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে হলে শিশুদের জন্যও একটি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যহীন সমাজ নিশ্চিত করার উদ্যোগ জোরদার করতে হবে।
এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়, আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, সমাজের অগ্র সেনা ও রাষ্ট্রের দিশারী। তারাই দেশ ও জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই তাদের জন্য সুন্দর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষে প্রয়োজনীয় মনোযোগ প্রদানের সময় এখনই। পাশাপাশি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।