বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সঠিক পদক্ষেপ নিন

  ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সঠিক পদক্ষেপ নিন

মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজার গত অক্টোবরের শেষ দিকে আবার খুলেছে। তবে এটি খুলেছে শুধু কৃষি খাতের জন্য। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ শ্রমবাজারে এবার পস্ন্যান্টেশন অর্থাৎ কৃষি খাতে কর্মী নেওয়া হচ্ছে। তবে এবারও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ জানুয়ারি। জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কারণে এবারও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, এ সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করে সব কর্মীর জন্য উড়োজাহাজের টিকিট সংগ্রহ করা জটিল হতে পারে। গত ৩১ মে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার আগে সব প্রক্রিয়া শেষ হলেও কেবল উড়োজাহাজের টিকিট না পাওয়ায় দেশটিতে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর। অবশ্য এবার সমস্যা এড়াতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দেশটি ইতোমধ্যে এ খাতে বিভিন্ন দেশের ২৫ হাজার কর্মী নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকরা। এই কর্মীদের বয়স হতে হবে ২২ বছর থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। কাজের মেয়াদ হবে তিন বছর। গতবারের অভিজ্ঞতায় এবার সে জটিলতা এড়াতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে গত ২৬ অক্টোবর ওই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কৃষি খাতের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর কোনো চাহিদাপত্র সত্যায়ন করবে না মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বু্যরো (বিএমইটি) থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র নিতে হবে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে। নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্রগুলো মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সত্যায়িত হয়ে আসার পর দ্রম্নত ছাড়পত্র দিচ্ছে বিএমইটি। ইতোমধ্যে পাঁচটি কোম্পানিতে নিয়োগ পাওয়া ৪৬১ কর্মীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ১ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ার মুদ্রা)।

মন্ত্রণালয় কৃষি খাতে কর্মী পাঠানোর খরচও নির্ধারণ করে দিয়েছে। ৩ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রিক্রুটিং এজেন্টরা কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ নিতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্ট নির্ধারিত তারিখের আগে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভিসা, বিএমইটির বহির্গমন ছাড়পত্র এবং উড়োজাহাজের টিকিট, প্রাক-বহির্গমন ওরিয়েন্টেশনসহ সব প্রস্তুতি নিশ্চিত করবে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মরত আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গেছেন ৯২ হাজার ৯০৬ জন। ২০১৮ সালে শ্রমবাজারটি বন্ধের চার বছর পর ২০২২ সালে চালু হয়েছিল। সে বছর গিয়েছিলেন ৫০ হাজার ৯০ জন।

এটা সত্য, মালয়েশিয়া কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সব সময় প্রাধান্য দেয়। তবে বাংলাদেশ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মী পাঠানোই বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিক ও স্বচ্ছ পদক্ষেপের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে