বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত সময়ের বিকল্প নেই

মো. জাহিদ হাসান
  ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত সময়ের বিকল্প নেই

আজ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চোখ আটকে যায় পত্রিকার পাতায়। চোখ আটকানোর বিশেষ কারণ- দেশে নানা স্থানে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ৫ আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে নতুন এক অধ্যায়ে পা দেয় বাংলাদেশ। এ সময় দেশের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, হানাহানি, লুটপাট-অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন অতিবাহিত হয়। চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নাম উপস্থাপন করা হয় ড. ইউনূসকে (স্যার)। দেশবরেণ্য কৃতী সন্তান, উন্নত জীবনকে দূরে ঠেলে দিয়ে দেশের ক্রান্তিলগ্নে চালকের আসনে উপনীত হন। তখন থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চাওয়া স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন, যা বর্তমান সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয়। একটি দেশের উন্নয়নের পুরোটাই নির্ভর করে সে দেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়ার ওপর। তাই জনগণের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলতে আমরা যেটা বুঝি, সেটা হচ্ছে একটি সরকারব্যবস্থা, যাকে কেন্দ্র করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তিনি মূলত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে মাথায় রেখে সংস্কারের কাজ করবেন। দেশ সংস্কারের পাশ কাটিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিমূল করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। তবে সরকারের একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। তার জন্য বিভিন্ন দল ও দেশের জনগণ সামগ্রিকভাবে সরকারকে সহযোগিতার প্রয়োজন। এক যুগেরও অধিক সময় জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে সরকার টিকে থাকলেও ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানে সরকার পতন হয়। তাই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থে সচেতন নাগরিক হিসেবে বিলুপ্ত সংবিধানগুলো সংশোধনীর প্রয়োজনীয় সময় দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাশে থাকার এখনই সময়। পূর্বের সরকারপ্রধানদের মনোভাব ছিল যেভাবে হোক ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে হবে, বিরোধী দলের টার্গেট ছিল যে কোনো উপায়ে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এই ছিল বাংলাদেশের রাজনীতি। দেশের সাফল্য তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে-বাইরের দেশগুলো ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে এ দেশকে ট্রিট করছে। আমাদের এই ব্যর্থ রাষ্ট্র গড়ার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই এগিয়ে আসুন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতায় পারে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের রোডম্যাপ আঁকতে। বিশ্বের কাছে আমাদের নতুনরূপে তুলে ধরার কারিগর নোবেলজয়ী ড. ইউনূস (স্যার) বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচন ও বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে তার সরকার কাজ করছে। তাই পূর্বের সব পৌরাণিক চিন্তা-ভাবনাকে পরিহার করে ধৈর্যের সঙ্গে সব অপ্রীতিকর ঘটনাকে আধুনিকতার আলোকে মোকাবিলা করার এখনই সময়। ছাত্র-জনতার অভু্যথানে তাজা রক্তের বিনিময় অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার্থে সব অপশক্তি প্রতিহত করতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

মো. জাহিদ হাসান

ঢাকা কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে