ওষুধের দাম বৃদ্ধি দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাজারে আবারও বেড়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম। এই নিয়ে কয়েক দফা ওষুধের দাম বাড়লো সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। এছাড়াও, ফার্মেসিভেদেও দামের মূল্য পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণও রাখা হয়- যা রীতিমতো অন্যায়। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, গত মাসেও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যথানাশক টেরাক্স ১০ প্রতিটি ১২ টাকায় বিক্রি হতো। একই ওষুধ এখন ৮ টাকা বেড়ে ২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। টেরাক্স ১০ মূলত অস্ত্রোপচারপরবর্তী মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথায় ব্যবহার করা হয়। ৫০ পিসের এক বক্স ওষুধের দাম এক মাসের ব্যবধানে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে রোগীকে ৪০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। শুধু একটি ওষুধ নয়, এসিআইয়ের চুলকানি বা খোস-পাঁচড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত টেট্রাসল ২৫ শতাংশ সলু্যসনের ৩০ এমএল বোতলের দাম ছিল ৬৮ টাকা- যা বেড়ে এখন হয়েছে ১২৫ টাকা। দাম বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। ইনসেপ্টার অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত উইন্ডেল গ্যাস রেস্পিরেটর সলু্যসনের তিন এমএলের বোতলের দাম ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই কোম্পানির অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত বুটিকট নেবুলাইজার সাসপেনশন বুডেসোনাইড দুই এমএলের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সিজ (বিডি) লিমিটেড হিউমুলিন এন ইনজেকশন ৩ মিলি কুইকপেন ৫টির এক প্যাকের দাম ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ। একই কোম্পানির ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় ইনজেকশন হিউমুলিন আর ৩ মিলি কুইকপেনের দাম ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৯০ টাকা। দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। অপসোনিন ফার্মার গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট ফিনিক্স ২০ এমজি প্রতি পিসের দাম ৭ টাকা থেকে বেড়ে ৮ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। জনস্বাস্থ বিশেষজ্ঞের মতে, ওষুধ হচ্ছে কমার্শিয়াল প্রোডাক্ট। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে। শুধু ওষুধ নয়, সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু সেই দাম কতটা যৌক্তিকভাবে বেড়েছে, সেটাই প্রশ্ন। ওষুধ তো আর চাল-ডালের মতো নয় যে, বেশি দামেরটা না কিনে কম দামেরটা কিনে খাওয়া যায় বা অল্প পরিমাণে খেয়ে থাকা যায়। চিকিৎসক যেভাবে প্রেসক্রাইব করবেন সেভাবেই রোগীকে সেবন করতে হবে। তাই জীবনরক্ষাকারী সব ওষুধকে অত্যাবশ্যক তালিকায় রেখে এগুলোর দামের বিষয়ে সরকারের উচিত হস্তক্ষেপ করা। তবে এটা সত্য, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ধরনের নজরদারি প্রয়োজন, সেটা আমাদের দেশে নেই। এটি না থাকায় কোম্পানিগুলো আইনের নানা ফাঁকফোকর দিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধের দাম নির্ধারণে একটি আলাদা ব্যবস্থাপনা বা অথোরিটি আছে। তারা ঠিক করেন কোন ওষুধের দাম কী হবে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যতিক্রম। সবই ঔষধ প্রশাসন করে। আমরা মনে করি, সব ধরনের ওষুধের মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মুলার ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য কঠোর নজরদারি বাড়ানোসহ কার্যকর কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।