রাজস্ব ঘাটতি সঠিক উদ্যোগ নিন
প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
রাজনৈতিক অস্থিরতার ধকল কাটাতে পারছে না রাজস্ব খাত। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানপরবর্তী শিথিল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের প্রভাব দেখা যাচ্ছে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস (জুলাই-অক্টোবর) সময়ে শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাময়িক হিসাবে এ চিত্র উঠে এসেছে। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর কোনো মাসেই মাসওয়ারি শুল্ক-কর আদায় করা সম্ভব হয়নি। প্রতি মাসেই আদায়ের লক্ষ্য থেকে বেশ পিছিয়ে ছিল এনবিআর। জুলাই মাসে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গণ-আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে সাধারণ ছুটির পাশাপাশি কারফিউ ছিল বেশ কয়েকদিন। এ সময় কলকারখানা ও সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকে। এসবের প্রভাব পড়ে শুল্ক-কর আদায়ে। গত ৮ আগস্ট নতুন সরকার গঠিত হলেও নানা ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা ছিল। বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি দাবিদাওয়া নিয়ে মাঠে নামে। ফলে, অস্থিরতার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় করা যায়নি। আমরা জানি, কেন ঘাটতি হয়। অতীতের সরকার প্রতি বছর বাজেট বড় করেছে। বাজেটের অর্থ জোগানের হিসাব মেলাতে এনবিআরের ওপর অযৌক্তিকভাবে বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে। এ জন্য লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
এনবিআরের হিসাব অনুসারে, গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে তাদের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল মোট ১ লাখ ৩২ হাজার ১১২ কোটি টাকা। তবে, এই সময়ে আদায় হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। ওই চার মাসে সব মিলিয়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভ্যাটের রিটার্ন জমা দেওয়ার পর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। তখন ঘাটতি কমে আসবে।
সূত্র মতে, গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম চার মাসের তুলনায় এবার বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে সব মিলিয়ে ৯৩ হাজার ২৪২ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় হয়েছিল। অর্থাৎ এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। প্রতীয়মান হচ্ছে, বছরের শেষের দিকে কর আদায়ে গতি বাড়বে।
আশার কথা, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এনবিআর কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে। এতে বাড়তি শুল্ক-কর আদায় হবে ধারণা করা যাচ্ছে। এ ছাড়া নানামুখী সংস্কার কার্যক্রমের সুফলও শিগগির মিলবে। আমরা মনে করি, সরকারের নানা উদ্যোগ ও তৎপরতার ফলে রাজস্ব ঘাটতি কমে আসবে।