বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

কোনোভাবেই দূষণমুক্ত হচ্ছে না রাজধানী ঢাকা- এমন খবর বারবার সামনে এসেছে। এছাড়া, এ কথাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যেসব তথ্য উঠে আসে তা উদ্বেগজনক। সঙ্গত কারণেই বায়ুদূষণ কমাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল ১০ম। এ সময় আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ১৫১। এক্ষেত্রে আমলে নেওয়া জরুরি যে, বাতাসের এই মান 'অস্বাস্থ্যকর' বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া, এটাও লক্ষণীয়, সোমবার ও আগের দিন রোববার দুই দিনই ঢাকার বায়ুর মান ছিল মাঝারি।

প্রসঙ্গত, বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বায়ুদূষণে প্রথম অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ছিল ৯৬৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের দিলিস্নর স্কোর ৩০৬। আমরা বলতে চাই, বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল ১০ম- এই তথ্য এড়ানোর সুযোগ নেই। একইসঙ্গে বায়ুদূষণ রোধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

এটাও বলা দরকার, এর আগে জানা গিয়েছিল যে, শীত মৌসুম শুরুর আগেই সরকার ঢাকার বায়ুদূষণ কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে উলেস্নখ করে পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, এক্ষেত্রে ঢাকার চারপাশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করাসহ বায়ুদূষণ রোধের ব্যবস্থা না করে নতুন ভবন নির্মাণের লাইসেন্স দেওয়া হবে না। খোলা ট্রাকে বালু বা ইট বহন করা যাবে না। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। এছাড়া, রাস্তায় গাড়ির যত্রতত্র হর্ন বন্ধ করাসহ যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিভিন্ন সময়ে দেশের বায়ুদূষণ সংক্রন্ত যে পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ফলে, বায়দূষণ কমাতে উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

স্মর্তব্য যে, এর আগে এমনটি জানা গিয়েছিল- বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ইটভাটাগুলো। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পের এক গবেষণায় উঠে এসেছিল যে, সারাদেশে ইটভাটা আছে প্রায় ৮ হাজার। আর ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে রয়েছে সাড়ে ৭০০টির বেশি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, ইটভাটাগুলো প্রতি মৌসুমে ২৫ লাখ টন কয়লা ও ২২ লাখ টন জ্বালানি কাঠ পোড়ায়। ইটভাটার দূষণে ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার টন গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়। ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা প্রায় ৫৮ শতাংশ দায়ী বলেও তথ্য উঠে এসেছিল। অন্যদিকে, বায়ুদূষণের কারণ হিসেবে নির্মাণকাজ, যানবাহন, সড়ক ও মাটি থেকে সৃষ্ট ধুলার কারণে, বিভিন্ন জিনিসপত্র, পস্নাস্টিক পোড়ানোসহ নানা কারণ উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, দূষণের কারণগুলো আমলে নিয়ে দূষণ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, একদিকে জানা যাচ্ছে মঙ্গলবার বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল ১০ম, যেখানে এই বাতাসের মানকে 'অস্বাস্থ্যকর' বলে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, এটাও আমলে নেওয়া জরুরি, বায়ুদূষণ রোধ না হলে সেটি উদ্বেগের। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। এছাড়া, সংশ্লিষ্টদের এটাও বিবেচনায় রাখা দরকার, বায়ুদূষণে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখসহ জনসাধারণের জীবনে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ফলে, বায়ুদূষণ সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বায়ুদূষণ কমাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে