আমাদের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে এবং মেয়ে একসঙ্গেই পড়ালেখা করে থাকে। সবাই একে অন্যের বন্ধু এবং সহপাঠী হিসেবে পরিচিত। একজন ছেলেকে যেভাবে দেখা উচিত একজন মেয়েকেও সেভাবে দেখা উচিত। বন্ধুত্বের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকা উচিত নয়। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়টা বেশ জটিল। এখনকার ছেলেমেয়েদের বন্ধুত্ব আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো পর্যায়ে আছে এটা যেমন স্বীকার করতে হবে, তেমনি এখনকার কিছু কিছু ছেলে তাদের মেয়ে বন্ধুদের প্রতি ভিন্ন দৃষ্টি দিয়ে তাকায় এটাও আমাদের মানতে হবে। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। সব ছেলেই যে তার সহপাঠীনির প্রতি ভালো দৃষ্টি দিয়ে দেখছে এটা কিন্তু সঠিক নয়। এমনও অনেক ছেলেকে দেখা যায়, ক্লাস রুমে বসেই তার সহপাঠী বান্ধবীকে নোংরা মন্তব্য করছে। আমরা হয়তো প্রচুর শিক্ষা নিচ্ছি ও দিচ্ছি। কিন্তু তার ফলস্বরূপ আমরা তেমন কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। দৈনন্দিন কি শিখছে ছাত্ররা সেটা বোঝা যায় তাদের আচরণের মাধ্যমে। এখনকার সময়ে দেখা যায় একটি মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছে তার অসংখ্য সহপাঠী। আসলে এটা একেকজনের মানসিকতার একটি বিষয়। কিন্তু আমরা এটা বুঝি না, কখন কোথায় কোন বয়সে এসে প্রেম করাটা উত্তম। হয়তো অনেক সময় ম্যাচুরিটির অভাবেও এমনটা হয়। আর এজন্য সমানভাবে দায়ী পরিবার ও সমাজ। এই সমস্যা সমাধানের জন্য পরিবার হতে পারে প্রধান মাধ্যম। পারিবারিক শিক্ষা এক্ষেত্রে অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকে যদি ছেলে সঠিক শিক্ষা না পায় তাহলে ছেলে যা খুশি তা-ই করতে পারে। পরিবারের তদারকি না থাকলে, নিয়মিত খোঁজ-খবর না রাখলে সন্তান নষ্ট পথে হাঁটবে- এটাই স্বাভাবিক। সন্তানকে সঠিক গাইডলাইনে না রাখলে, নিয়মিত শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে গড়ে না তুললে এমন ভুল সন্তানরা বারবার করবে। তবে সব ছেলে আবার এমন- সেটা কিন্তু মোটেও নয়। কিছু কিছু বন্ধুত্ব রয়েছে যাদের মধ্যে ছেলে-মেয়ে সবাই থাকে এবং সবাই একতাবদ্ধ। নেই কোনো অশালীন কার্যকলাপ, নেই কোনো অশ্লীল আচরণ, চাল-চলন। যেখানে দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক থাকবে সেখানে সবকিছুই ঠিক থাকবে। মানসিকতা ঠিক রাখলে সবকিছুই ঠিক রাখা যায় বলে আমার বিশ্বাস। আর এই মানসিকতার ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে পরিবারের। বাবা-মায়েরা যদি সন্তানদের মানসিকভাবে গড়ে তোলেন তাহলে এমন সমস্যা থেকে সবাই মুক্ত থাকবে। তাই বলা যায়, পারিবারিক শিক্ষাই একটা সন্তানের আসল শিক্ষা।
আজহার মাহমুদ
চট্টগ্রাম