শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

রিজার্ভ পরিস্থিতি

প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন
  ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
রিজার্ভ পরিস্থিতি

বর্তমান সরকারের নানা তৎপরতা ও ইতিবাচক উদ্যোগের পরও রিজার্ভ পরিস্থিতি সন্তোষ জনক নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে, যা দেড় মাসেও আগের অবস্থান ছাড়াতে পারেনি। গত ২২ দিনে সাড়ে চার কোটি ডলার বাড়ার পর বুধবার তা দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে। এটি বিপিএম ৬ পদ্ধতির হিসাব। গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩০ বিলিয়নে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুসারে নিট রিজার্ভ গণনা করা হয়। গ্রস বা মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ জানা যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের চারদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করে। ওই হিসাব অনুযায়ী ৩০ জুলাই তা ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার, ২১ আগস্টও ছিল তাই। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের পর ১২ সেপ্টেম্বর তা নেমে হয় ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। ২ অক্টোবর তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়নে। আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের পর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় রিজার্ভ বাড়ছে। তবে সরকারি এলসি খোলার কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হয়। আবার ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনাও হয়। বর্তমানে ডলার বিক্রি করার চাইতে কেনা হচ্ছে বেশি।

এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির সময় ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়ে ৫০ বিলিয়নের মাইলফলকের দিকে ছিল দেশ। তবে মহামারি বিশ্ববাজারে শেষে জ্বালানি আর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, এরপর ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হলে বেড়ে যায় আমদানি খরচ। ২০২২ থেকে কমতে থাকে রিজার্ভ। গত দুই অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে সরকারি ঋণপত্র বা এলসি খোলার জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে, এতেও কমছে বৈদেশিক মুদ্রা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে রিজার্ভ বাড়বে, কমার কোনো আশঙ্কা নেই। কিন্তু সেটি ঘটেনি।

আমরা মনে করি, রিজার্ভ কমার বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। যৌক্তিক কারণেই রিজার্ভ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। মনে রাখা দরকার, রিজার্ভ কমে যাওয়াটা অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। এটিকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নই প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে