বিশ্বের জনবহুল শহর জনঘনত্ব কমাতে হবে

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের জনবহুল শহরের মধ্যে শীর্ষ তিনটি হচ্ছে, জাপানের রাজধানী টোকিও, ভারতের রাজধানী নয়াদিলিস্ন ও চীনের সাংহাই। জাপানের রাজধানী টোকিও। এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর। জাপানের ঐতিহাসিক এই শহর দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও শিল্পনগরী। জাপানের অনেক বড় বড় কোম্পানির প্রধান কার্যালয় এ শহরে অবস্থিত। খাবারদাবার, আধুনিক স্থাপত্যের কারণে ওসাকা পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। শহরটির মেট্রো ব্যবস্থা বছরে ৯০ কোটির বেশি মানুষ পরিবহণ করে। টোকিওতে ৩ কোটি ৭৪ লাখ মানুষ বাস করে। টোকিওর জনসংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের চেয়ে চার গুণ বেশি। শহরটির আয়তন ১৩ হাজার ৪৫২ বর্গকিলোমিটার। বৃহত্তর টোকিও মহানগর এলাকার প্রতি কিলোমিটারে গড়ে ২ হাজার ৬৪২ জন মানুষ বাস করে। ভারতের রাজধানী নয়াদিলিস্ন জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। নয়াদিলিস্নতে ২ কোটি ৯৩ লাখ মানুষ বাস করে। চীনের সাংহাই বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলোর একটি। চীনের সাংহাই শহরে ২ কোটি ৬৩ লাখ মানুষের বসবাস। শহরটির সড়কের ধারে গড়ে ওঠা সারি সারি দোকানে দৈনিক ১০ লাখ মানুষ কেনাকাটা করে। বিপুলসংখ্যক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বেইজিংয়ে অবস্থিত। গত ৫০ বছরে সাংহাইয়ের জনসংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। প্রতি কিলোমিটারে বাস করে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ জন। এরপরই আছে চতুর্থ স্থানে ব্রাজিলের সাও পাওলো। শহরটিতে জনসংখ্যা ২ কোটি ১৮ লাখ। একদিকে চরম দারিদ্র্য, অন্যদিকে, ধনসম্পদের চাকচিক্য। এই বৈশিষ্ট্যের জন্য ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরটি বিশেষভাবে পরিচিত। এই বাণিজ্যকেন্দ্রটিতে যেমন আকাশচুম্বী ভবন আছে, তেমনি আছে বস্তিও। পঞ্চম স্থানে রয়েছে মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি। মেক্সিকো সিটির বর্তমান জনসংখ্যা ২ কোটি ১৬ লাখ। সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এ শহরের বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২ লাখ। ঢাকা সম্পর্কে বিবিসি সায়েন্স ফোকাস সাময়িকীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী শহরটি দ্রম্নতগতিতে বাড়ছে। চারদিকে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত এ শহরের বাসিন্দারা। শহরে বছরজুড়ে নানা ধরনের উৎসব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান লেগে থাকে। শহরটির লালবাগ দুর্গ, নিমতলী দেউড়ি, বড় কাটরা, ছোট কাটরা, আহসান মঞ্জিল পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকা শহরে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শহরটির যানজটের পরিস্থিতি ভয়াবহ। পরিবহণব্যবস্থা নিম্নমানের। মানুষে মানুষে গিজগিজ করছে ঢাকায়। বিশ্বের জনসংখ্যা ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর ৮০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে। মানুষের সংখ্যা বাড়ার এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা সময় ধরে অব্যাহত থাকবে, তা নিয়ে মতভেদ আছে। কোনো কোনো গবেষণা বলছে, চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে জনসংখ্যা বাড়ার প্রবণতা কমতে শুরু করবে। তবে তার আগেই বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮৮০ কোটি। জাতিসংঘের অনুমিত হিসাব বলছে, ২০৮০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা ১ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে, মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। এর ফলে, শহরগুলো ব্যাপকভাবে জনবহুল হয়ে পড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ শহরে মানুষের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে না নাগরিক সুযোগ-সুবিধা। একই চিত্র রাজধানী ঢাকারও। আমরা মনে করি জনবহুল শহরগুলোতে জনঘনত্ব কমাতে হবে, বাড়াতে হবে নাগরিক সুবিধা ও সেবা। এ জন্য পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি।