বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বেড়েছে সঠিক উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের ছবিটা এখনো কতখানি ভয়ানক তার সঠিক তথ্য উঠে এসেছে এক পরিসংখ্যানে। বিশ্বের মধ্যে ভারতের পরিস্থিতি সবচেয়ে আশঙ্কাজনক। সদ্য প্রকাশিত দারিদ্র্য সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে ১১০ কোটি মানুষ তীব্র দারিদ্র্যের অন্ধকারে ডুবে রয়েছেন। তার অর্ধেকই মূলত ৫টি দেশের। যার মধ্যে সবার আগে ভারত। এখানে অতি দরিদ্র মানুষ ২৪.৪০ কোটি। পাকিস্তানে ৯.৩০ কোটি, ইথিয়োপিয়ায় ৮.৬০ কোটি, নাইজেরিয়ায় ৭.৪০ কোটি, কঙ্গোতে ৬.৬০ কোটি মানুষ রয়েছেন এই তালিকায়। মোট দরিদ্র মানুষের প্রায় অর্ধেকই (৫৮.৪০ কোটি) শিশু। তবে আফগানিস্তানে সেই হার ৫৯ শতাংশ। ওই ১০০ কোটি ছাড়ানো মোট দরিদ্রদের প্রায় ৪০ শতাংশ সংঘর্ষে জর্জরিত এবং দুর্বল দেশগুলোর বাসিন্দা। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) এবং অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে দরিদ্রদের ৮৩ শতাংশই গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। একই সংখ্যক গরিব মানুষ দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোর বাসিন্দা। জাতিসংঘ ও অক্সফোর্ড মিলে এই বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) প্রকাশ করে ২০১০ সাল থেকে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবনযাত্রার মানসহ ১০টি মাপকাঠির নিরিখে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এ বছর ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে দারিদ্র্য সূচক। দুই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এই রিপোর্টে সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলের দারিদ্র নিয়ে সমীক্ষার ওপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরে ২০২৩ সালেই বিশ্বজুড়ে সামরিক সংঘর্ষ হয়েছে বেশি। সংঘর্ষ, বিপর্যয় ও আরও কিছু কারণে ১১.৭০ কোটি মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, ৪৫.৫০ কোটি বহুমাত্রিকভাবে দরিদ্র মানুষ সংঘর্ষপূর্ণ অঞ্চলে বাস করেন। তারা পুষ্টি, শিক্ষা, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাওয়ার ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ অঞ্চলের দরিদ্রদের থেকে ৩ থেকে ৫ গুণ বেশি বঞ্চিত। এছাড়া করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। ফলে, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে চরম দারিদ্র্য বলতে ওই মানুষকে বলা হয়েছে, যিনি প্রতি দিন ১ দশমিক ৯০ ডলারের (১৬১ টাকা) চেয়ে কম অর্থে জীবনযাপন করেন। বিশ্বব্যাংক আশঙ্কা করছে বিশ্ব অর্থনৈতিক উৎপাদন পাঁচ শতাংশেরও বেশি সংকুচিত হবে- যা দারিদ্র্য দূরীকরণে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর প্রচেষ্টা মুছে ফেলবে। আমরা মনে করি, বিশ্বের বিভিন্ন অর্থ প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাকে এ ব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচন ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত না হলে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য আরও বাড়বে। সুতরাং, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে দারিদ্র্য বিমোচনে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।