৬৫ কলেজে কেউ পাস করেনি
কঠোর পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছরে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সব বোর্ডের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে একযোগে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী। এদিকে, এবার দেশের ৬৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কেউ পাস করতে পারেননি। গত বছর শূন্য পাস করা কলেজের সংখ্যা ছিল ৪২টি। সেই হিসাবে এবার শূন্য পাস কলেজের সংখ্যা বেড়েছে। এ সংখ্যা ২৩টি। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সব শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের যে সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে, সেখান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এতে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর প্রথমে ১১ আগস্ট ও পরে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আগস্টে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে। বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা আছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিলেন, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ফলে ধারণা করা হয়েছিল, এবার পাসের হার বাড়বে। ইংরেজিতে অনেক শিক্ষার্থী ফেল করায় পাসের হার বাড়েনি। উপরন্তু ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত ও মান শক্ত না করেই একের পর এক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে- যা সনদ বিতরণ করলেও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এ কারণে বাংলাদেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেকার থাকা সত্ত্বেও অনেক খাতে উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের যুক্তি, দেশে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সময়ের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে, এ অবস্থার অবসানের দিকেই সংশ্লিষ্টদের জোর দিতে হবে।
দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা এর আগে বলেছেন, প্রধানত শিক্ষার নিম্নমানই এর জন্য দায়ী। এ দেশে শিক্ষিতের বেকার হওয়ার আশঙ্কা অশিক্ষিতদের তুলনায় বেশি। এর মধ্যে যদি দেশের ৬৫ প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কেউ পাস না করে বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাবরই বলা হয়ে থাকে, ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ফেল করার চিত্র বদলাচ্ছে না কেন? এটা খুবই লজ্জাজনক অবস্থা। আমরা মনে করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।