দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মৃতু্য দাঁড়াল ২০১ জনে। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চলতি বছরের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০ হাজার ৮৯৫ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৬১ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছর মোট ৩৭ হাজার ১৭২ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট এক হাজার ৭০৫ জন মারা যান। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
আমরা জানি, ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। সঠিক উদ্যোগের অভাবে দিন দিন এডিস মশার উৎপাত বেড়েছে। ফলে, সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
দেশে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। অন্যদিকে, মৃতু্যর সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে, ডেঙ্গুসংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই। আক্রান্ত ও মৃতু্য- এসব তথ্য আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এডিসবাহিত এই রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। এ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য যেখানে এডিস মশা জন্ম ও বৃদ্ধি পায় সেখানে যেমন ধ্বংস করা দরকার, এর পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতেও কার্যকর উদ্যোগও জরুরি।
আমরা মনে করি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বিবেচনায় রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এর আগে এমন আলোচনা উঠে এসেছে- বিভিন্ন কারণে পরিত্যক্ত বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গা দেখভাল ভালোভাবে হয় না। এতে বিভিন্ন জায়গায় এডিসের ঘনত্ব দেখা দেয়। ফলে, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং অভিযান পরিচালনা করতে হবে। উলেস্নখ্য, যেহেতু এডিস মশা সংক্রমিত মশা। এতে এক রোগী থেকে অন্যজন সংক্রমিত হয়ে থাকে। তাই সংশ্লিষ্টদের সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃতু্য হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃতু্য হয়েছিল। ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত এ রোগে ২৮১ জন মারা যান।
ডেঙ্গু সংক্রান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিতে হবে। যথাযথ পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।