সাংবিধানিক দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব

সংবিধানের বিভিন্ন দুর্বলতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর গণতন্ত্র, শাসন ব্যবস্থা এবং আইনের শাসনে উলেস্নখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজন সঠিক ও কার্যকরী সংস্কার।

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

জেসমিন আক্তার
দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল অঞ্চল। এই অঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলোর রাজনৈতিক ইতিহাস, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক কাঠামোতে সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও প্রতিটি দেশের সংবিধান নিজস্ব ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রণীত হয়েছে, কিন্তু এগুলোর কিছু সাধারণ দুর্বলতা রয়েছে- যা তাদের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ভারতের সংবিধান ১৯৫০ সালে কার্যকর হয় এবং এটি বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক সংবিধান। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার ও নীতির ভিত্তি তৈরি করেছে, যেমন ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আইনের শাসন। তবে ভারতের সংবিধানে কিছু কাঠামোগত দুর্বলতাও রয়েছে- বিশেষ করে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে। ভারতের সংবিধানের ৩৫২-৩৬০ ধারাগুলো কেন্দ্রীয় সরকারকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা প্রদান করে। এই ধারাগুলো অসংখ্যবার রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ১৯ মাস ধরে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। এর ফলে, নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে প্রণীত পাকিস্তানের সংবিধান মূলত ইসলামী আদর্শের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যেটি রাজনীতি ও সমাজে ইসলামের প্রভাব সুসংহত করে। ১৯৫৮, ১৯৭৭ এবং ১৯৯৯ সালে তিনবার সেনা অভু্যত্থান ঘটে। সামরিক শাসনের কারণে গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংবিধান সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল এবং শাসন ব্যবস্থায় সামরিক প্রভাব বাড়ছে। শ্রীলঙ্কার সংবিধান প্রথম প্রণীত হয় ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পরে। দেশটি রাষ্ট্রপতির হাতে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেছে। ফলস্বরূপ রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলেছে। সংবিধানে তামিল জনগোষ্ঠীর অধিকার স্বীকৃত হয়নি- যা গৃহযুদ্ধের একটি বড় কারণ ছিল। নেপালের বর্তমান সংবিধান ২০১৫ সালে গৃহীত হওয়ায় সেখানে একটি ফেডারেল গণতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু সংবিধান তৈরির সময় থেকেই নেপালের কিছু জাতিগত ও আঞ্চলিক গোষ্ঠী এটি নিয়ে বিরোধিতা করে আসছে। ফলে, জাতিগত বৈষম্য ও অকার্যকর বিচার ব্যবস্থা এখানেও বিদ্যমান। মালদ্বীপের ২০০৮ সালের সংবিধান বিভিন্নভাবে মানবাধিকার ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা উন্নত করলেও, এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দুর্বলতা রয়েছে। মালদ্বীপের সংবিধান ইসলামের বাইরে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সীমিত করেছে। শুধু মুসলিমরা মালদ্বীপের নাগরিক হতে পারে এবং অন্য কোনো ধর্ম পালনের অধিকার তেমন একটা নেই। এটি ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করে। বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালে গৃহীত হয়, সেই থেকে এটি গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থার জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি হিসেবে আজও প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি দুর্বলতাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ঘন ঘন সংশোধনী, বিচার বিভাগের রাজনীতিকরণ এবং কার্যকর চেক এবং ভারসাম্যের অভাবের কারণে। এই বিষয়গুলো শাসনব্যবস্থাকে যেমন ব্যাহত করে, তেমনই আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দুর্বল করে তোলে। রাজনৈতিক প্রভাব, নির্বাহী কর্তৃত্ব এবং ঘন ঘন সংশোধনী সংবিধানকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এতটাই দুর্বল করে তুলেছে যে, এর ফলে, সরকারি পুরো সিস্টেমটাই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নির্বাহী ক্ষমতার ভারসাম্য বজায়, শাসন ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ, মানবাধিকার রক্ষা এবং নির্বাচন কমিশনের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন যথাযথ সংস্কার। সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাব নতুন সরকারের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। তবে তা হতে হবে জনসম্পৃক্ত এবং নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে- যাতে এটি জনগণের ইচ্ছা ও স্বার্থকে প্রতিফলিত করে, রাজনৈতিক অভিজাতদের নয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দুর্বলতা : (ক) বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রধান দুর্বলতা হলো ঘন ঘন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংশোধনী। গৃহীত হওয়ার পর থেকে সংবিধানটি ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে- যা প্রায়ই জাতীয় স্বার্থের চেয়ে শাসক দলের রাজনৈতিক ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করেছে। এসব সংশোধনী প্রায়ই ক্ষমতা সংহতকরণ বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে করা হয়। যেমন- ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনী একদলীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চেক এবং ভারসাম্য ব্যবস্থা বিলোপ করে এবং ২০১১ সালের ১৫তম সংশোধনী ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রবর্তন করলেও ভবিষ্যতে কিছু ধারা পরিবর্তন নিষিদ্ধ করে- যা গণতান্ত্রিক বিতর্ককে বাধাগ্রস্ত করে। (খ) সংবিধান নীতিগতভাবে নির্বাহী, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজনের কথা বলে। তবে বাস্তবে নির্বাহী শাখার প্রভাব বিচার বিভাগ ও আইনসভার ওপর উলেস্নখযোগ্য। বিচারক নিয়োগ ও অপসারণ নির্বাহী শাখার দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়- যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। (গ) সংবিধান নির্বাহী শাখাকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করে। এর ফলে, ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে, যেখানে নির্বাহী শাখা আইনসভা ও বিচার বিভাগের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। ক্ষমতার এই কেন্দ্রীকরণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত এবং জবাবদিহিতা হ্রাস করে। (ঘ) বাংলাদেশের সংবিধানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিধানগুলো সংবিধানের চতুর্থ অংশের ১৪১ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবনকে বিপদের সম্মুখীন হতে দেখলে রাষ্ট্রপতিকে দেশের কোনো নির্দিষ্ট অংশে বা সমগ্র বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা প্রদান করে। জরুরি অবস্থায় সাধারণত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার স্থগিত করা হয়- যা মানুষের বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের অধিকার এবং বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের অধিকার লঙ্ঘিত করে। ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থার সময় এটি বিশেষভাবে প্রমাণিত হয়েছিল, যখন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। (ঙ) স্থানীয় শাসনের দুর্বলতা সংবিধানে বিকেন্দ্রীকরণ শাসনের বিধান থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমিত ক্ষমতা এবং আর্থিক স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। এই ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ স্থানীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা এবং গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় জবাবদিহিতা কমিয়ে দেয়। (চ) যদিও সংবিধান একটি শক্তিশালী মৌলিক অধিকার বিল অন্তর্ভুক্ত করে, তবে কয়েকটি সংশোধনী এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা এই সুরক্ষাগুলোকে ক্ষুণ্ন করেছে। যেমন- ১৬তম সংশোধনী- যা সংসদকে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা প্রদান করেছিল, তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়েছিল। এর ফলে, মানবাধিকারের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়া, রাষ্ট্রকে বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করার জন্যও সমালোচনা করা হয়েছে- যা সংবিধানের সুরক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। (ছ) বাংলাদেশের সংবিধান একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিধান দেয়। তবে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা এবং অর্থ ও পেশিশক্তির ভূমিকাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে- যা নির্বাচনের প্রতি জনসাধারণের আস্থা কমিয়ে দেয়। ভোট জালিয়াতি, ভোটার দমন, এবং ভোটার তালিকা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগ বাংলাদেশি রাজনীতিতে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। (জ) আইনের শাসন, জবাবদিহিতার দুর্বলতা দুর্নীতি এবং শাসন ব্যবস্থায় জবাবদিহিতার অভাব বাংলাদেশের আইনের শাসনকে দুর্বল করেছে। সংবিধানের বিধান থাকা সত্ত্বেও, দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়ই রাজনীতিকরণ এবং অকার্যকর। এটি শাসনব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করে। সংস্কারের প্রস্তাব : সংবিধানের দুর্বলতার পরিপ্রেক্ষিতে আশু সংস্কার প্রস্তাবনা পর্যায়ক্রমে উলেস্নখ করা হলো- (ক) সংবিধান সংশোধনের জন্য আরও শক্তিশালী একটি প্রক্রিয়া চালু করা উচিত; যেমন- পার্লামেন্টে শুধু দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরিবর্তে আরও বিস্তৃত ঐকমত্য প্রয়োজন। সংশোধন প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজকে সম্পৃক্ত করা হলে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়, বরং জনগণের স্বার্থ রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করবে। (খ) বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নিয়োগ এবং অপসারণ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং অরাজনৈতিক করার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। একটি বিচারক নিয়োগ কমিশন গঠন করা যেতে পারে, যেখানে নাগরিক সমাজের সদস্য, আইন বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য স্বাধীন সংস্থার প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যাতে প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আওতায় না পড়ে। (গ) নির্বাহী ক্ষমতার ওপর প্রাতিষ্ঠানিক চেক শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরি। এটি সংসদকে ক্ষমতাবান করে এবং তার নজরদারি কার্যক্রমকে বাড়িয়ে তোলা যায়। সংসদ সদস্যদের নির্বাহী সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার আরও স্বাধীনতা থাকা উচিত এবং সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো আইন এবং নীতির তদারকি করতে আরও সক্রিয় হতে পারে। (ঘ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা উন্নীত হয়। স্থানীয় সরকারগুলোকে আরও আর্থিক স্বাধীনতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করা এবং নিয়মিত, অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে স্থানীয় নির্বাচনের বিধানগুলোকে আরও শক্তিশালী করা উচিত। (ঙ) বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করা মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, বাকস্বাধীনতা বা সভা-সমাবেশের অধিকার সীমিতকারী আইন, যেমন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, পর্যালোচনা এবং বাতিল করা হলে তা সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার সুরক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। (চ) একটি সত্যিকারের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা- যা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে, নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী সংস্কারে কঠোর প্রচারণার অর্থ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছ ভোট গণনা এবং আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত- যা বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করবে। (ছ) দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোকে আরও স্বাধীনতা, সম্পদ এবং দুর্নীতির মামলা তদন্ত ও বিচার করার জন্য আইনি ক্ষমতা প্রদান করা জরুরি। এই সংস্থাগুলোর ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রোধের জন্য শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হলে আইনের শাসনের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। সংবিধানের বিভিন্ন দুর্বলতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর গণতন্ত্র, শাসন ব্যবস্থা এবং আইনের শাসনে উলেস্নখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজন সঠিক ও কার্যকরী সংস্কার। সংশোধনী প্রক্রিয়ায় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা এবং স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন- এই সংস্কারগুলো প্রতিটি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখবে। জেসমিন আক্তার : প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক