জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জনদুর্ভোগের বিষয়টি নতুন নয়। এছাড়া, এটাও বলা দরকার যে, সামান্য বৃষ্টিতেই রাজধানী ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট আকারে দৃশ্যমান হয়- এমন আলোচনা বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অলিগলি, সড়ক-মহাসড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এসব পথে চলাচলের সময় ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিপুলসংখ্যক যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। পথে পথে দেখা দেয় তীব্র যানজট। আর এ কারণে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেওয়া মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ, শান্তিনগর, বেইলি রোড, মালিবাগ, মৌচাক, পল্টন, মতিঝিল, ধানমন্ডি ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন জলাবদ্ধ গলিতে সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট যানবাহন বিকল হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে- যার ফলে, ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, টানা বৃষ্টি ও যানবাহন বিকল হয়ে বুধবার রাত ১১টা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এমনটিও জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় ঝুম বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর ঢাকার অনেক সড়ক তলিয়ে যায়, সেসব সড়কে চলাচল করার সময় বিপুলসংখ্যক যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। বৃষ্টির মাঝে এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় যানজট পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এমন মতামতও উঠে এসেছে যে, ঢাকার জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব না হলে সংকট থাকবেই। এছাড়া যানবাহন বিকল হয়ে অনেককে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয়েছে মেরামতের জন্য। তীব্র যানজটের কারণে যাত্রীরা যথাসময়ে গন্তব্যস্থলে যেতে পারেননি অনেকে। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিকভাবে জলাবদ্ধতা এবং যানজট পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে, এর প্রভাবে জনজীবনে কতটা ভোগান্তি নেমে আসে, কতটা দুর্ভোগের কারণ হয় সেটাও এড়ানো যাবে না। ফলে, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ এবারই নয়, বিভিন্ন সময়ে নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে স্বাভাবিক জীবন বিঘ্নিত হয়। ফলে, আবার যখন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি জানা গেল, তখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। এমন আলোচনা বারবার সামনে এসেছে যে, রাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের। শহরের অন্যতম একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। সামান্যতম বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাটসহ অনেক এলাকা। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই। আমলে নেওয়া দরকার, নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে সমন্বিত পরিকল্পনার অভাব সুস্পষ্ট। তাদের ভাষ্য দুই সিটি করপোরেশন যা করেছে তা সাময়িক ব্যবস্থা। ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা মহাপরিকল্পনাকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু টাকা খরচ করছে তারা। দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ ছাড়া ঢাকার জলাবদ্ধতার সমাধান হবে না। ফলে, এই বিষয়গুলো আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সর্বোপরি বলতে চাই, জলাবদ্ধতার যে চিত্র পরিলক্ষিত হয় তা কতটা উদ্বেগের- সেটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা এবং যানজট পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি মনে রাখতে হবে রাজধানী ঢাকার জন্য জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের সংকট। আর এর আগে এটাও আলোচনায় এসেছে যে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ জলবাদ্ধতার অন্যতম কারণ। ফলে, এটিও এড়ানো যাবে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে- এমনটি কাম্য।