সড়কে প্রাণহানি নিরাপদ করতে হবে যাতায়াত
প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। যদিও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্ঘটনা কমেনি।
এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার লিংক রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় চারজনের মধ্যে দু'জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, জামালপুর শহরে ট্রাকের ধাক্কায় ব্যাটারিচলিত ইজিবাইকের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে শহরের বেলটিয়া টিউবওয়েল পাড় মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে এর আগে উলেস্নখ করা হয়েছিল- দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটর সাইকেলের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো এবং আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকরা এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। এ ছাড়াও মহাসড়কের নির্মাণ ত্রম্নটি, যানবাহনের ত্রম্নটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো। আমরা মনে করি, এসব সমস্যা এখনো রয়ে গেছে।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বারবার বলা হয়েছে- জরুরি ভিত্তিতে মোটর সাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করতে হবে। পাশাপশি দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক। মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহণ ও দীর্ঘদিন যাবত ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বড় বড় দুর্ঘটনা থেকে যদি আমরা শিক্ষা নিতে না পারি তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবেই। দুর্ঘটনায় মৃতু্যর হার কমাতে হলে দোষীদের তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণকেও নৌ, রেল ও সড়ক পথে ভ্রমণ ও রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে। পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধ করতে।