উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ নয় শান্তি চাই

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। তেহরানও বলেছে, ইসরায়েল আবার হামলা করলে পরিণতি হবে ধ্বংসাত্মক। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুলস্নাহ ও ইয়েমেনের সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে লেবাননে হিজবুলস্নাহ ও ইসরায়েলের সেনাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াই চলছে। এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, গত বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুলস্নাহর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ইসরায়েলি আট সেনা। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত বুধবারও গাজায় অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারালেন। গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে এক বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়ছে হিজবুলস্নাহ ও হুতি। তাদের সমরাস্ত্র ও আর্থিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে ইরান। পাশাপাশি গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসকেও সহযোগিতা করে আসছিল তেহরান। ইরান সরাসরি জড়িত না থাকলেও ইসরায়েলের সঙ্গে চলছিল ছায়াযুদ্ধ। গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্য দিয়ে যুদ্ধে ইরান সরাসরি জড়িয়ে পড়ল। গত শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হিজবুলস্নাহপ্রধান হাসান নাসরুলস্নাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে লেবাননে সেনা পাঠায় ইসরায়েল। এরপর ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা করে। এতে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সবচেয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ইরানের হামলার মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটা সত্য হামলা, প্রতি-হামলা, আগ্রাসনে মহাউত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে ফ্রান্সের আহ্বানে জরুরি বৈঠক করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত দাবানলের চেয়েও দ্রম্নতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। মধ্যপ্রাচ্য এখন একটি সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে উলেস্নখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডনের অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর রাইদ জারার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসে, তাহলে এর সমাপ্তি ঘটবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে বলতে হবে যে, তারা আর ইসরায়েলকে অস্ত্র, অর্থ ও সহযোগিতা দেবে না। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হামলায় সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, বাস্তুচু্যত ১০ লক্ষাধিক। সব মিলে একটা সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক বিপর্যয়ের শঙ্কা সৃষ্টি করছে। কূটনীতি ও সমর বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ক্ষমতায় মত্ত ইসরায়েল যেন অনন্ত যুদ্ধের দরজা খুলে দিচ্ছে। অথচ যুদ্ধ নয়, শান্তি এবং জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার- এটাই হওয়া উচিত বিশ্বমানবের দর্শন। এ বোধদয় হওয়া চাই বিশ্ব-বিবেকের পর্যায়ে পৌঁছানো শীর্ষ নেতাদের। উসকানি নয়, যুদ্ধংদেহি সব পক্ষকে সংযত ও নিরস্ত্র করতে তারা জোরালো ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করে পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় মানুষ।