শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দেড় মাসে শতাধিক খুন রাজধানীতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দেড় মাসে শতাধিক খুন রাজধানীতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। খুন, ছিনতাই, পিটিয়ে হত্যাসহ নানা ঘটনায় জনগণের মধ্য আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাড়ে ৪০০-এর বেশি থানায় হামলা, অস্ত্র লুট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পিটিয়ে হত্যা করা হয় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে। এরপর পুলিশ কর্মবিরতি ঘোষণা করলে অপরাধীরা অবাধে বিচরণ করতে থাকে এবং নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে। পরে পুলিশ কাজে ফিরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও অপরাধীদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়েনি।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত দেড় মাসের কিছুটা বেশি সময়ে শুধু রাজধানীতে শতাধিক খুন, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৩০টি। এসব ঘটনায় জড়িত অপরাধী ধরা পড়ার সংখ্যা খুবই কম। পুলিশের ভাষ্য, নানা অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীরা এতদিন কারাগারে ছিল। এখন যেসব অপরাধ হচ্ছে, সেসব অপরাধে তাদের নামও আসতে শুরু করেছে। অর্থাৎ তারা বের হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ডিএমপির একাধিক থানার ওসির মত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে আগের চেয়ে কিছুটা খারাপ হয়েছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। পুলিশের ভেতর এখনো আতঙ্ক রয়েছে। তাছাড়া সব থানাতেই সম্প্রতি তাদের পদায়ন হয়েছে। এখনো এলাকা হিসেবে সবকিছু বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। এটা সত্য, ঢাকা শহরে প্রায় ২ কোটি মানুষ বসবাস করে। এ ক্ষেত্রে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হতে পারে। যখন একটা ঘটনা ঘটে, ঘটনার কারণ কী এবং অপরাধীদের চিন্তা কী, এসব বিশ্লেষণ করে পুলিশ অভিযুক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসে। তবে দাগি আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে অপরাধীদের হাতকে শক্তশালী করছে। এরই প্রভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে বেড়েছে সব ধরনের অপরাধ। অন্যদিকে, পুলিশ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও গাড়ি সংকটে আগের মতো টহল দিতে পারছে না, অপারেশনাল কার্যক্রমও সেভাবে শুরু হয়নি। পুলিশের চেইন অব কমান্ড এখনো ঠিক হয়নি। এসব পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। পাশাপাশি ছিনতাই, পারিবারিক কলহ, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রভাব বিস্তার, দখল ও মতের পার্থক্যকে কেন্দ্র করে খুনোখুনি ঘটছে প্রতিদিন। ছিনতাইকারীদের হটস্পট হিসেবে রাজধানীর ১৮টি স্থানকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এসব জায়গার মধ্যে ছিনতাইয়ের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ- শাহবাগ, মতিঝিল, খিলগাঁও, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, হাজারীবাগ ও মোহাম্মদপুর এলাকা। আমরা মনে করি, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে