শিল্পোন্নত দেশগুলোর লাগামহীন আচরণে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। উন্নত দেশগুলোর শিল্পকারখানা ও ব্যক্তিগত ভোগবিলাসের ফলে গ্রিন হাউস গ্যাসের ব্যাপক নির্গমন ঘটছে। কার্বন ডাই-অক্সাইড পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার কারণেই জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বাড়ছে জলবায়ুর অস্বাভাবিক আচরণ। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যা, নদী ভাঙন, ঘূর্ণি ঝড়, খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ সবকিছু ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ কোনোভাবেই দায়ী নয়। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বোচ্চ ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের মতে, বর্তমানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে চলেছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনকে অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনতে ১৯৩টি দেশ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। সেখানে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোর অনিহায় তা বাস্তবায়ন হয়নি।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বে একটি স্বীকৃত সত্য এবং দৃশ্যমান ঘটনা। গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ গলার কথা অনেকের জানা। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এবার দক্ষিণ মেরুর অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করেছে। বিশ্বের তাবৎ বিজ্ঞানী সতর্ক করে বলছেন, প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন হলেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। বর্তমানে মানবসভ্যতা যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, তার মধ্যে জলবায়ুজনিত সংকট সবচেয়ে বড়। সারা বিশ্বই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি এবং তার প্রভাবের মধ্যে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য গ্রিন হাউস গ্যাসকে দায়ী করা হচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবেই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত বিশ্ব। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ পরিবর্তনের মাশুল দিতে হচ্ছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোকে। তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের মানুষ অনেকটা অযাচিতভাবেই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নানাবিধ দুর্যোগের শিকার। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই। বাংলাদেশে কার্বন নিঃসরণের হার মাত্র দশমিক ৪৭ শতাংশের কম। আর উন্নত দেশগুলোতে গড় কার্বন নিঃসরণের হার ছয় টনের বেশি। কোনো রকম দূষণ না ঘটিয়েও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নিষ্পাপ শিকার। উন্নত বিশ্বের পরিবেশবিধ্বংসী উন্নয়ন-কার্বন নির্গমন এবং তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য মূলত দায়ী।
বিশ্বে বাতাসে যত কার্বন ডাই-অক্সাইড মিশছে, তার অধিকাংশই আসছে মাত্র চারটি শিল্পোন্নত দেশ থেকে। এগুলো হচ্ছে- চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়া। সঙ্গে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। শিল্পোন্নত দেশগুলোর লাগামহীন আচরণে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। বরফ গলে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ সব কিছু ঘটছে। পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার কারণেই জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। সারা বিশ্বই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি এবং তার প্রভাবের মধ্যে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য গ্রিন হাউস গ্যাসকে দায়ী করা হচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবেই এর জন্য দায়ী উন্নত বিশ্ব। কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে চীন এবং এটি দ্বিতীয় স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ কার্বন নিঃসরণ ঘটাচ্ছে। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে ভারত, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া। আর সম্মিলিতভাবে ইইউ দেশগুলো কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণে ভারতের ওপরে অবস্থান করছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তঃসরকার সংস্থা ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) চতুর্থ রিপোর্টে বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী। একই সঙ্গে কার্বন নিঃসরণে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এশিয়া ও ইউরোপের বড় অর্থনীতির দেশগুলোও এগিয়ে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী চীন বছরে ১১ হাজার ৫৩৫ মেগা টন কার্বন নিঃসরণ করছে। এই দূষণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট বায়ুমন্ডল দূষণের সমান। ব্রিটিশ জ্বালানি কোম্পানি পেট্রোলিয়াম পিএলসি এসব তথ্য জানিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন জীবন ও অর্থনীতির অস্তিত্বের জন্য একটি হুমকি। জলবায়ু এখন ঘরের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। চরম তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, বন্যা ও খরা, অধিকতর তীব্র গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঋতু পরিবর্তন, নদী ভাঙন, সাগরে লবণাক্ততা বৃদ্ধি বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক নৈতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক ঘটনায় বাস্তুচু্যত হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে এরই মধ্যে জলবায়ু অভিবাসীদের সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে।
জলবায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণের খুলনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছে। জলবায়ুর প্রভাবে সবখানেই লবণজলের আগ্রাসন। উপকূলের মানুষকে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে এক কলসি পানি কিনে আনতে হয়। উপকূলীয় এলাকায় এক কলসি পানির দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা। উপকূলের নারীদের পানির সন্ধানে পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘপথ। বিশুদ্ধ যাচাই-বাছাই তো দূরের কথা, কোনোমতে খাওয়া যায় এমন খাবার পানি জোগাড় করতেই উপকূলের নারীদের দিন কেটে যায়। দেশের উত্তরের বরেন্দ্র অঞ্চলেও সুপেয় খাবার পানি এখন দুষ্প্রাপ্য। ওয়াটার এইড বাংলাদেশের গবেষণায় বলা হয়েছে, পানির দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে সুপেয় পানি পাচ্ছেন না প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ বছরের কম বয়সি প্রায় পাঁচ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে সুপেয় পানি সুবিধার অভাবে। দেশের উপকূল, পার্বত্য এলাকা, হাওড়াঞ্চল, বরেন্দ্র এলাকা, চা বাগান ও দুর্গম এলাকায় পানির সংকট তীব্র হচ্ছে।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। চরমমাত্রার তাপ, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, তীব্রতর বন্যা, খরা এবং বঙ্গোপসাগরে বিরাজমান উত্তাল আবহাওয়া এখন প্রায়ই নিয়মিত ঘটনা। বাংলাদেশের পানির প্রধান উৎস হিমালয়ের বরফ দ্রম্নত গলছে। এর ফলে, বাংলাদেশ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমাত্রিক হুমকির মুখে। বাংলাদেশে বছরের এখন প্রায় ১০ মাস গরম থাকে। শীতের দুই মাসেও কোনো কোনো বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে। অসময়ে খরা আর বৃষ্টি প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠেছে। খরা বাংলাদেশের একটি প্রচলিত দুর্যোগ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তা নতুনরূপে আবির্ভূত হচ্ছে। প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ হেক্টর ফসলি জমি বিভিন্ন মাত্রায় খরায় আক্রান্ত হয়।
বাংলাদেশে আমন চাষ সম্পূর্ণ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। এখন কোনো কোনো বছর ভরা বর্ষায়ও বৃষ্টির দেখা মেলে না। ফেটে চৌচির হয় ফসলের মাঠ। বাংলাদেশে আমন আবাদের ভরা মৌসুমে নদনদীতে পানি পাওয়া যায় না। উন্মুক্ত জলাশয়, পুকুর, খাল-বিল শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। অথচ আগে আমন রোপণের সময়টায় ধানক্ষেতের পাশেই নালা-ডোবা, হাওড়-বিল পানিতে থাকত টইটম্বুর। এ পানি দিয়েই আমন ক্ষেতে সেচ দিতেন কৃষক। বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের অন্যতম। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভয়াবহ সেচের পানি সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই সারাদেশে প্রায় আড়াই লাখ শ্যালো টিউবওয়েলে সেচের পানি উঠেছে না।
২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উদ্বাস্তু হবে। এ হিসাবে ২০৫০ সালের মধ্যে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে এক কোটি ৩০ লাখ। এ তথ্য কম্প্র্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বাস্তুচু্যত ব্যবস্থাপনাবিষয়ক জাতীয় কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে জলবায়ুর প্রভাবে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাত্র সাত বছরে বাংলাদেশের ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। জাতীয় কৌশলপত্রে বাস্তুচু্যতির জন্য উপকূল ছাড়া অন্যান্য এলাকায় মূলত বন্যা ও নদীভাঙনের কারণে উদ্ভাস্তু হচ্ছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নিয়মিত খরা হচ্ছে। পানি সংকট তীব্র হচ্ছে। ফসল নষ্ট হচ্ছে। উপকূলে নদীভাঙনে কর্ম হারিয়ে অভাবের তাড়নায় মানুষ বাস্তুচু্যত হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে বাংলাদেশে বাড়ছে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা, খরা, প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বজ্রপাতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। বজ্রপাতের ডেড জোন এখন বাংলাদেশ। ইউনিসেফের গবেষণায় বাংলাদেশে এক কোটি ৯০ লাখ শিশুর জীবন ও ভবিষ্যৎ হুমকিতে ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তন। আইসিডিডিআরবি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় অঞ্চলে নারীদের গর্ভপাত বাড়ছে।
জলবায়ুর পরিবর্তন সব বয়সি মানুষের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। শুধু বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে দেশে বছরে আট হাজার ২৪১ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচের গবেষণা প্রতিবেদন 'বিশ্ব জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০২০' এসব তথ্য এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতি হওয়া দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। এবার জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মৃতু্যতে শীর্ষে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় অঞ্চলে নারীদের গর্ভপাত বাড়ছে। আইসিডিডিআরবি ১২ হাজার ৮৬৭ জন নারীকে গর্ভধারণের শুরু থেকে সন্তান হওয়া পর্যন্ত এসব নারীর গবেষণার আত্ততায় রাখে। গবেষণায় উপকূল, পাহাড়ি ও সমতলের নারীরা ছিল। আইসিডিডিআর,বি বলছে, পাহাড়ি বা উঁচু এলাকায় বসবাসকারী নারীদের তুলনায় উপকূলীয় এলাকায় (সমুদ্রের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে) বসবাসকারী নারীদের গর্ভপাত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
আইপিসিসির সর্বশেষ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের তাপমাত্রা আগে অনুকূল ছিল। আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ছয়টি ঋতু ছিল। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ঋতু হারিয়ে যেতে বসেছে। সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাত, বন্যা, তাপমাত্রা সবকিছুতেই পরিবর্তন হচ্ছে। অসময়ে বন্যা, অতিবৃষ্টি, অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, খরা, লবণাক্ত পানিতে জমি ডুবে যাওয়াসহ বহুবিধ সমস্যায় বাংলাদেশের কৃষি এখন চরম হুমকির সম্মুখীন। পার্বত্য জেলাগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে, অধিক তাপে সেখানকার মাটির বুনন আলগা হয়ে যাচ্ছে। আবার বর্ষায় বৃষ্টি বেড়ে সেখানে পাহাড়ধস বাড়ছে। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। আবার বর্ষার আগে তাপমাত্রা দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। জলবায়ুর প্রভাবে প্রাকৃতিকভাবেই পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
আলতাব হোসেন : লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক