দারিদ্র্য বিমোচন সঠিক উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য উদ্বেগজনক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সুযোগ এবং সম্পদে অভিগম্যতা পেতে জীবন সংগ্রামে নিয়োজিত। যাদের জীবন ও জীবিকা প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, বৈশ্বিক সংঘাত-যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাসে অর্জিত অগ্রগতি ঝুঁকিতে আছে। যার প্রভাব গ্রাম থেকে শহরের ওপর পড়ছে। দেশে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে- যা ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে বিরাট বাধা। জীবিকা হারানো, জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ-সংঘাত, নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিরাট ব্যবধান বাদ পড়া জনগোষ্ঠীকে আরও প্রান্তের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'দারিদ্র্য ও অসমতা নিরসন এবং সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা জোরদারকরণ' শীর্ষক জাতীয় জনসম্মিলনে এ তথ্য জানানো হয়। গেস্নাবাল কল টু অ্যাকশন এগেইনস্ট পোভার্টির (জিক্যাপ) সহায়তায় এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স ও নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনআরডিএস) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, এসডিজি বাস্তবায়নের ধীর গতি আশাহত করছে দেশের প্রান্তিক মানুষকে। বিগত বছরগুলোতে করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক সংকট এসডিজির অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এসডিজি অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার কঠিন পথযাত্রায় নতুন কৌশল ও সমন্বিত কর্মপ্রচেষ্টা জোরদার করা জরুরি। অর্থনৈতিক সংকট ও জলবায়ু সংকটে বাড়ছে বৈষম্য, বাড়ছে দারিদ্র্য, বাড়ছে বাস্তুচু্যত পরিবেশ শরণার্থীর বিপদাপন্নতা। সাম্প্রতিক সময়ে কলকারখানা বন্ধ করে দেয়া এবং কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। ফলে, দেশের অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। দারিদ্র্য বাড়বে। উলেস্নখ্য, ২০১০ সাল থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা বাড়লেও দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কমছে। দারিদ্র্য হার কমিয়ে আনতে সব দরিদ্র পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছিল, সেখানেও দুর্নীতি হয়েছে। এর সুফল দেশের গরিব মানুষ পায়নি। আমরা মনে করি, সরকারের যে কোনো প্রকল্পেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জরুরি। পরিবার সমাজ তথা রাষ্ট্র থেকে দারিদ্র্য দূর হোক এটাই আমরা চাই। তবে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে না পারলে দারিদ্র্য পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। এ কারণে আমাদের যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা সে অবস্থায় এখনো যেতে পারিনি। এসব বাধা দূর করতে পারলে দারিদ্র্য আশানুরূপ হ্রাস করা সম্ভব।