অনিরাপদ খাদ্য ঝুঁকি

রোধ করতে হবে

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে অনিরাপদ খাদ্য ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে প্রতি বছর প্রাণ হারায় কমপক্ষে ৪ কোটি মানুষ। আর অসুস্থ হয়ে পড়ে ৬০ কোটি। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য জানান। রাজধানীর শাহবাগে বিএফএসএর নিজস্ব কার্যালয়ে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। বিএফএসএর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ৭০ ভাগ মৃতু্য হয় অসংক্রামক রোগে। তার মধ্যে ডায়রিয়ার কারণে মৃতু্য আছে ৪ নম্বরে। তাই গবেষণার মাত্রা বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষকে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করা উচ্চতর মানবিক ও কল্যাণমূলক কাজ। সেমিনারে বলা হয়, এর আগে ১৩টি দুধের স্যাম্পলের মধ্যে ১১টিতে হেভি মেটাল পাওয়া গিয়েছিল। এটি নিয়ে কাজ করায় তা থেকে উত্তরণ হয়েছে। বিশ্বে প্রতি বছর অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে ৬০ কোটি লোক অসুস্থ হয়ে পড়ে এই তথ্য নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে ১০টি গবেষণায় অর্থায়ন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দেশের খাদ্য ব্যবস্থায় এটি বড় অবদান রাখবে। স্ট্রিট ফুডগুলোতে নানা ধরনের রং ব্যবহার খাবারকে আকর্ষণ করে তোলা হয়। এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর। আমাদের সাধারণ মানুষের তথা নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম পছন্দের খাবার পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাত্রা এত বেশি যে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। অবাক ব্যাপার যে, এক রোগের ওষুধ সেবন করলে অন্যান্য রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তা ছাড়া, স্কুলের সামনে বিক্রি হওয়া আচার, ফুসকাসহ শিশুরা যে ধরনের খাবার খায় সেসব থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুডের দোকান বেশি। শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ফাস্টফুড খায়। তার মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ধরনের খাবার বেশি খায়। এসব তৈলাক্ত খাবারে জিহ্বায় আলাদা স্বাদ জমে। ফলে, এসব খাবারের প্রতি তারা বেশি আকর্ষিত হয়। এরপর অন্য খাবার আর ভালো লাগে না। এর ফলে, শিক্ষার্থীরা মারাত্মভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। অতীতে ভেজাল, মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য উৎপাদন, মজুত ও বিক্রয়ের অভিযোগে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। তার কিছু সুফল পাওয়া গেছে। এই অভিযান আবার শুরু করা উচিত। খাদ্য নিরাপত্তা আইনের মূল ভিত্তিসমূহ হলো- খাদ্যে ভেজাল না মিশিয়ে খাদ্য সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে, খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিত দেখা দিলে যারা তার সঙ্গে নিযুক্ত বা জড়িত তাদের সঠিক ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে বিচার বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, অনিরাপদ ও ভেজাল খাদ্যপণ্য জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই প্রবণতা চলতেই থাকলে জাতীয় সক্ষমতার ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল করবে। এটা কোনোক্রমেই হতে দেয়া যায় না। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।