শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটি

মো. সাদাকাতুল বারি
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটি

শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত নতুন নতুন পদ্ধতি। ১০-১৫ বছর আগেও শিক্ষা ছিল শিক্ষক কেন্দ্রিক। অর্থাৎ শিক্ষক বলবে শিক্ষার্থীরা শুনবে, খাতায় লিপিবদ্ধ করবে। যাকে এক কথায় বলা হতো 'জগ-মগ' পদ্ধতি। বর্তমানে এ ধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা হয়েছে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ে সমানভাবে শ্রেণিতে সক্রিয় থাকে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়কে সক্রিয় রাখার পাশাপাশি পাঠকে আকর্ষণীয়, আনন্দদায়ক ও সহজ থেকে সহজতর করতে তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে আইসিটি অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি। শিক্ষার প্রথম স্তর যাকে ধরা হয় অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয়ও আইসিটি ব্যবহার করা হচ্ছে শ্রেণিতে পাঠদান করতে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় সরকার একটি করে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর ও স্কিন প্রদান করেছে। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে একের অধিকও দিয়েছে। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য কঠিন, দুর্বোধ্য ও বিমূর্ত বিষয়ক শিক্ষকরা ছবি, অ্যানিমেশন ও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করে শ্রেণি কার্যক্রমকে আনন্দময় করে তুলছে। শিক্ষকদের পারদর্শী করার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে পর্যায়ক্রমে ১২ দিনব্যাপী আইসিটি বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা ইন্টারনেটে সার্চ করে পাঠ উপযোগী বিভিন্ন উপকরণ ডাউনলোড করে শ্রেণি উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে নিজেদের পেশাগত দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারছে।

ফলে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে বহুগুণে সক্ষম হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ অতি সহজ ও সাবলীলভাবে ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমে করতে পারছে। পাঠদানের ক্ষেত্রে উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত বিভিন্ন পোস্টার, ছবি, মডেল, চার্ট ইত্যাদির মাধ্যমে পাঠদান করলে ও শিক্ষার্থীদের শতভাগ মনোযোগী করার অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করলে বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীর কাছে অনেক বেশি আনন্দময়, সহজবোধ্য করে তোলা যায়। ফলে শিক্ষা হয়ে উঠছে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক।

শিক্ষকরা আগে থেকেই কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পাওয়ার পয়েন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিও, অডিও, ছবি, অ্যানিমেশন ব্যবহার করে পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্টকে স্স্নাইডে পরিণত করেন। পরে শ্রেণিকক্ষে তা শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেন। এতে পাঠ্যপুস্তকের কালো অক্ষরে লিখিত ঘটনা বা বিষয় শিক্ষার্থীর কাছে শব্দে, চিত্রে, গতিময়তা, ভিডিও এবং অ্যানিমেশনের মাধ্যমে সহজেই জীবন্ত ও সহজসাধ্য হয়ে ওঠে। শিক্ষকদের তৈরি ডিজিটাল কনটেন্ট একটি বিশেষ ওয়েবসাইট এবং জাতীয় তথ্যকোষে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে। যা সবার কাছে শিক্ষক বার্তায়ন নামে পরিচিত। সময় ও পরিবেশ, পরিস্থিাতির কারণে যদি শিক্ষক কনটেন্ট তৈরি করতে না পারে তবে এই ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় কনটেন্ট ডাউনলোড করে সম্পাদনা করে শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করতে পারছে। বাংলাদেশের যে কোনো অঞ্চল থেকে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে। সর্বোপরি আইসিটি বা তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা ক্ষেত্রে এখন শিক্ষকদের তৈরি অডিও-ভিজুয়াল উপকরণ হিসেবে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য।

মো. সাদাকাতুল বারি

সহকারী শিক্ষক

২নং কচুকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সদর, নীলফামারী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে