চালের দাম বৃদ্ধি বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, বাজারে চালের কোনো সংকট নেই, তবুও বেড়েই চলেছে চালের দাম। গত দেড় মাসে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে এখনো তা বেড়েই চলেছে। এদিকে চালের দাম আরও বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আড়তদাররা। প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারে চালের কোনো সংকট না থাকা সত্ত্বেও কেন বেড়েছে চালের দাম? বিগত সরকারের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারা চালের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাছাড়া ক্ষুদ্র চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ না পাওয়ায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারিভাবে চালের মূল্য নির্ধারণের জন্য বাজার মনিটরিং করার কথা থাকলেও তা হয়নি। যার ফলে, বাজারে পর্যাপ্ত চাল থাকা সত্ত্বেও এক ধরনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান চালের দাম বাড়িয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ছোট ব্যবসায়ীদের ওপর। চালের এই কৃত্রিম সংকট নিরসনে সঠিক উপায়ে বাজার মনিটরিং না করলে অক্টোবর পর্যন্ত চালের বাজারে অস্থিরতা থাকতে পারে। তবে নভেম্বরে নতুন ধান বিশেষ করে আমন কাটা শুরু হলে চালের দাম কমার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের যুক্তি হচ্ছে, দেশের ১৪ জেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে বিপুল পরিমাণ চাল লাগায় চালের দাম বেড়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারেও চালের দাম বেড়েছে। ফলে, ৫০ কেজি চালের প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। নাজির শাইল চাল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি মানের বিআর ২৮-২৯ নম্বর চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। এছাড়াও, মোটা স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা, হাইব্রিড মোটা ৫৬ টাকা। এসব চালের মূল্য দেড় মাস আগেও কেজি প্রতি দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত কম ছিল বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বিশ্ববাজারে চালের দাম দেশের বাজারের চেয়ে বেশি। ফলে, আমদানির সম্ভাবনাও কম। ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি গুদাম ও ব্যবসায়ীদের কাছে কী পরিমাণ চাল মজুত আছে, তার কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। তবে ইউএসডিএর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বাজারে চালের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। সব মিলিয়ে দুই মাস অস্থিরতা বজায় থাকবে দেশের চালের বাজারে। তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ। বেশি দামে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটে খাওয়া দিনমজুররা। অথচ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাজারে চালের দাম কমার কথা ছিল। কারণ, পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে চাঁদাবাজিকে দায়ী করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী এখন তো চাঁদাবাজি থাকার কথা নয়। তা হলে ঠুনকো অজুহাতে চালের দাম বেড়েছে কেন? আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, ভাত-প্রধান বাঙালি যদি তাদের চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং, যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।