রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সীমান্ত হত্যা বন্ধে সঠিক পদক্ষেপ নিন

  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সীমান্ত হত্যা বন্ধে সঠিক পদক্ষেপ নিন

কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না সীমান্ত হত্যা। এবার ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরের বাবাসহ দুজন আহত হয়েছেন। আর নিহতের মৃতদেহ বিএসএফ নিয়ে গেছে বলে পুলিশের ভাষ্য। নিহত ১৫ বছর বয়সি জয়ন্ত কুমার সিংহ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ফকির ভিটা গ্রামের মহাদেব কুমার সিংহের ছেলে।

উলেস্নখ্য, ১৫ বছর বয়সি ফেলানী খাতুন বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারায় ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে সেই ঘটনার সাড়ে ১৩ বছর পর স্বর্ণাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। নিহত স্বর্ণা মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। এভাবে নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যার ঘটনা কেন বারবার ঘটছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।

বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুয়ায়ী, ২০২৩ সালে ৩১ জন বাংলাদেশি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বা নির্যাতনে নিহত হয়েছেন। ২০২১ ও ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৮ ও ২৩। আসকের হিসাবে এর আগে ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১১ বছরে ৫২২ জন বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে বা নির্যাতনে মারা গেছেন। এ বছরও ১৫ জনের মৃতু্যর তথ্য পাওয়া গেছে। এভাবে তারা গুলি করে মানুষ মারবে আর আমরা কোনো প্রতিবাদ করব না সেটা তো হয় না? সরকারকে অবশ্যই এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানাতে হবে। কেউ যদি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা যেতে পারে। আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। কিন্তু তাকে গুলি করে মারতে হবে কেন? আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে অন্য কোনো দেশের সীমান্তে এভাবে মানুষকে হত্যা করা হয় না। তাহলে তারা আমাদের ভালো প্রতিবেশী কীভাবে হলেন? ভালো প্রতিবেশী বা বন্ধু রাষ্ট্রের কাজ তো এমন হতে পারে না। এসব বিশ্লেষণের সময় এসেছে।

বলা হয়ে থাকে, সীমান্ত হত্যাকান্ডে যেসব মানুষ মারা যায়, এর অধিকাংশ লোক গরু চোরাকারবারির সঙ্গে সংযুক্ত। এটা কতটা সত্য? আমরা মনে করি, ভারত থেকে প্রতিশ্রম্নতি আনতে হবে- যাতে সীমান্ত হত্যা দ্রম্নত বন্ধ হয়। শুধু প্রতিশ্রম্নতি দিলে হবে না, তা কার্যকর করতে হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক স্থায়ী হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। অবৈধ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠোর বিচারের আওতায় আনতে হবে। এসব বিচার বহির্ভূত হত্যা চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। সীমান্তে হত্যার বিষয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের আরও বৃদ্ধি করতে হবে। সীমান্তে হত্যা বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে