শিক্ষাগুরুর মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হোক
প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নাদিয়া সুলতানা
শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর। একটি শিক্ষিত জাতির পেছনে যিনি রয়েছেন তিনি একজন শিক্ষক। বাবা-মায়ের পর শিক্ষকের স্থান। শিক্ষক হলেন মানব সন্তানের দ্বিতীয় জন্মদাতা। অ্যাডামস বলেছেন, 'শিক্ষকের প্রভাব অন্তকাল ধরেও শেষ হয় না।'
২০১৩ সালে শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা নিয়ে গবেষণা করে ভার্কি ফাউন্ডেশন। গবেষণায় দেখা যায়, এশিয়ার দেশগুলো সামাজিক কাঠামোয় বিশেষ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোয় শিক্ষকদের বৃহৎ সম্মানের চোখে দেখা হয়। আর বর্তমানে আমাদের দেশে এই শিক্ষকরা তার হাতে গড়া ছাত্রছাত্রী কর্তৃক অবমাননার এবং অপমানের শিকার হচ্ছেন। তবে আমরা আমাদের সেই 'শিক্ষাগুরুর মর্যাদা' কবিতায় যা পড়েছি এবং শিখেছি তা ভুলতে বসেছি? আমরা কি ভেবে দেখছি আমাদের এই মহান শিক্ষাগুরুদের সঙ্গে আমরা কি আচরণ করছি?
শত শত বছর ধরে শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। শিক্ষাগুরু হিসেবে তারা দেশ, সমাজ ও জাতির কাছে নমস্য। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগছে আমরা কিভাবে সেই শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিচ্ছি, তাকে লাঞ্ছিত করছি, তার সামনে পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকছি। যে শিক্ষক আমাদের পিতৃস্নেহে জরিয়ে ধরবে, শাসন করবে। আজ সেই শিক্ষক আমাদের ভয় পাচ্ছে। আমাদের নৈতিক শিক্ষার মান ধীরে ধীরে কোথায় গিয়ে ঠেকছে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি? যার আজ এমনটা করছে তাদের বলব, কিছু শিক্ষক যদি খারাপ করেও থাকে তবুও তাদের সঙ্গে সঙ্গে এমন করবেন না। উগ্রতা দিয়ে কোনো কিছুই ঠিক করা যায় না। মনে রাখতে হবে আমরা ভালো কিছু দিতে পারলে ভালো কিছু অর্জন করতে পারব। ক্ষমা, স্নেহ, ভালোবাসা, সম্মান দিয়ে পরিবর্তন আনা যায় উগ্রতা দিয়ে নয়। তাই আমাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যেন ভুলে না বসি আমাদের শিক্ষাগুরুর মর্যাদা। ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.) শিক্ষকের প্রতি তার শ্রদ্ধার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, 'আমার শিক্ষক ইমাম মোহাম্মদ (রহ্.) যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন আমি তার বাড়ির দিকে পা মেলে বসিনি। আমার মনে হতো এতে যদি শিক্ষকের প্রতি আমার অসম্মান হয়ে যায়।'
তাই আমাদের উচিত শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মানের স্থান দেওয়া। শিক্ষকরাই যেহেতু জাতি গড়ার কারিগর তাই তাদের তাদের প্রাপ্য সম্মান ও শ্রদ্ধা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা যেন আমাদের দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করি এবং আমাদের দ্বারা যেন শিক্ষাগুরুর মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে সচেতন থাকি।
নাদিয়া সুলতানা
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ