শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বর্ণ চোরাচালান রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
স্বর্ণ চোরাচালান রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

দেশে কোনোভাবেই স্বর্ণ চোরাচালান রোধ করা যাচ্ছে না। কিছুদিন পর পরই ধরা পড়ছে স্বর্ণের বার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুই কোটি ৬৪ লাখ টাকা (২ কেজি ৭৮৪ গ্রাম) মূল্যের স্বর্ণ জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ঘটনায় দুবাই থেকে আসা ছনিয়া আক্তার ও ছালমা বেগম নামে দুই নারীকে আটক করা হয়েছে। সোমবার সকালে দুবাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যাত্রী ওই দুই নারীর কাছ থেকে এ স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়েছে। হাতব্যাগের মধ্য থেকে কালো স্কচ টেপে মোড়ানো দুটি বান্ডিলে স্বর্ণের ২৪টি বার জব্দ করা হয়। জব্দ করা স্বর্ণের মোট ওজন ২ দশমিক ৭৮৪ কেজি। সেগুলো ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদামে জমা দেওয়ার পাশাপাশি বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেন স্বর্ণের খনি। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্বর্ণের ছোটবড় চালান আসছে, ফাঁক গলে বের হয়ে যাচ্ছে, মাঝে মাঝে দু'একটি চালান ধরাও পড়ছে। শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশে স্বর্ণের চাহিদা বছরে ১৬ থেকে ২৬ টন। কিন্তু এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি স্বর্ণ অবৈধ পথে দেশে আসছে। পাঁচটি স্বর্ণের চালান এলে ধরা পড়ে মাত্র একটি।

আমাদের স্মরণে রাখা দরকার, এ ক্ষেত্রে কাজ করছে বড় ধরনের দেশি ও বিদেশি সিন্ডিকেট। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে স্বর্ণ চোরাচালানের বড় ধরনের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এর আগে এমন খবরও সামনে এসেছে, যাদের চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে। চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিল গোয়েন্দারা।

বলা দরকার, বাংলাদেশ যে স্বর্ণ চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চোরাচালানকারীরা তৎপর তা বিভিন্ন সময়ের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়। এর আগেও হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। প্যান্টের ভেতর, কম্বলের ভেতর কিংবা বিমানের টয়লেটে, এমনকি যাত্রীর জুতায়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে সর্বত্রই পাওয়া গেছে স্বর্ণের বার বিভিন্ন সময়ে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েও উদ্ধার করছে স্বর্ণের বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে স্বর্ণের চোরাচালান। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে। কেননা, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা দেশের জন্য বিপজ্জনক। এটা দেশের ভাবমূর্তিরও প্রশ্ন।

আমরা মনে করি, এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। দেশ থেকে চোরাচালান একেবারেই বন্ধ হোক এমনটি সবার কাম্য। আর সে জন্য সক্রিয় হতে হবে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদেরই।

স্মরণে রাখতে হবে, চোরাচালান রোধের দায়িত্ব যাদের, তারা যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তা হলে সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে? আর কীভাবেই বা চোরাচালান রোধ হবে? অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে স্বর্ণ চোরাচালান রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে