নাব্য সংকটে ৯০ ভাগ নদ-নদী সঠিক পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নাব্য সংকটে দেশের ৯০ ভাগ নদ-নদী। এর মধ্যে বিলীন হয়েছে শতাধিক। পাড় দখল ও দূষণে জর্জরিত নদ-নদীগুলো। জেলাভিত্তিক জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশে ১০০৮টি নদী থাকলেও শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শতভাগ নদী দখল ও দূষণের শিকার। পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে। সংগঠনটি তথ্য ও গবেষণা পরিষদ জেলা কমিটির মাধ্যমে জেলাভিত্তিক গবেষণা চালিয়ে আসছে। গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। উলেস্নখ্য, ঢাকা বিভাগে ১৬৮টি, বরিশাল বিভাগে ৯০টি, খুলনা বিভাগে ১২৪টি, রাজশাহী বিভাগের ১১০টি, রংপুর বিভাগে ২৬৮টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৫টি, নদী রয়েছে। সারাদেশে ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার দূরে জলরাশি প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিক অর্থে নদীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি না হয়ে বর্তমানে তা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এক হাজার ৮টি নদী থাকলেও যার শতকরা ৯০ ভাগ নদী নাব্য সংকটে ভুগছে। ফলে সাম্প্রতিক বিভিন্ন জেলায় বন্যা ভয়াবহ পরিস্থিতির ধারণ করেছে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে নদীর নাব্য সংকটকে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। নদীর দখল ও দূষণের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ও হুমকির মুখে পড়েছে। ২০১৫ সালের আইইউসিএনের তথ্যমতে, ৩১ প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। অসংখ্য বন্যপ্রাণী আজ হুমকির সম্মুখীন। আবাসস্থল যেমন নষ্ট হচ্ছে, ঠিক তেমনি নষ্ট হচ্ছে আবাসস্থলের গুণগত মান। জলাশয় ভরাট বন্ধে দেশের সব জলাশয় চিহ্নিতকরণ, সীমানা নির্ধারণ ও খননের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশবাদী সংগঠন, গবেষক ও পরিবেশ সাংবাদিকদের সমন্বয়ে সরকারিভাবে এস্টেক হোল্ডার বডি তৈরি করে মাসিক সেবা চালু এবং পরিবেশবিষয়ক গবেষণায় জোরদার করতে জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করার পাশাপাশি সব ধরনের দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নদী আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই পরিচিত। জালের মতো বিস্তৃত থাকা অসংখ্য নদী প্রবাহিত মিষ্টি পানিই পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য, ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে মানুষের জীবনধারণের মূল উৎস হয়ে আছে। পৃথিবীতে এমন দেশ খুব কমই আছে, যেখানে বাংলাদেশের মতো নদনদী রয়েছে। সঙ্গত কারণেই দখল ও দূষণের শিকার নদনদীকে বাঁচাতে হবে। পাশাপাশি নদীর মাধ্যমে মৎস্য সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। মাছের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করার মাধ্যমে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনই না; জীবন বাঁচাতে, পরিবেশকে রক্ষা করতে, জবির উর্বরতা বৃদ্ধিতে, উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে, বর্ধনশীল উষ্ণতাকে প্রশমিত করতে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে নদী সংরক্ষণের বিকল্প নেই। সে জন্য সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।