ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য কঠোর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল ছিনতাইকারীরা। রাজধানী ঢাকায় তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর বাসাবোতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ব্যাটারিচালিত রিকশার এক চালক নিহত হয়েছেন। শনিবার ভোর ৪টার দিকে বাসাবো ফ্লাইওভারের নিচে এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। চালক ইউসুফ সাধুকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভোর সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ৪০ বছর বয়সি ইউসুফ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে। তিনি যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন। তার পরিবার গ্রামে থাকে, ইউসুফের ঘরে তিন ছেলে আছে। ঘটনাটি নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই মামলায় ৬৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় মোট ৩০৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তখন বলা হয়েছিল ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। নানা কারণে পুলিশ সে দিকে মনোযোগ দিতে পারেনি। এটা সত্য, ছিনতাইকারীরা সাধারণত গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তবে ভোরের দিকে ছিনতাই বেশি হয়ে থাকে। দিনের বেলায়ও রাজধানী ঢাকায় ছিনতাই হয়ে থাকে। ছিনতাইকারীরা মহিলাদের ভ্যানিটিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় সহজেই। এ জন্য ছিনতাইকারীরা মোটর সাইকেল ব্যবহার করে থাকে। কখনো কখনো তারা প্রাইভেট কারও ব্যবহার করে থাকে। এই শহরে চালককে হত্যা করে গাড়ি, সিএনজিচালিত বেবিট্যাক্সি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশের হিসাবেই রাজধানী ঢাকায় ছয় হাজারের বেশি ব্যক্তি ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৭ জন ছিনতাই এবং ৪ হাজার ৪৬১ জন ডাকাতিতে জড়িত। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৈরি করা কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারে এসব অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বৃত্তান্ত রয়েছে। এতে ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় ছিনতাই-ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য রয়েছে। বর্তমানে রাজধানীর অনেক ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের রহস্যের জট খুলতে পুলিশের তথ্যভান্ডারকে কাজে লাগানো হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অপরাধীদের নিয়ে গড়ে তোলা তথ্যভান্ডার অপরাধী শনাক্ত ও ঘটনা প্রতিরোধের একটি মাধ্যম। আমরা মনে করি, কেবল এর ওপর নির্ভর করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। কারণ, অনেক সময় অপরাধীরা তাদের এলাকা থেকে সরে যায়। তখন এই জায়গায় আবার নতুন অপরাধী যুক্ত হয়ে অপরাধ ঘটায়। তাই পুলিশকে নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে ঘটনা ঘটার আগেই অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি সেসব এলাকা টহল ও নজরদারির মধ্যে রেখে অভিযান চালাতে হবে। আমরা মনে করি, পুলিশ সক্রিয় হলেই রাজধানী থেকে ছিনতাই ডাকাতির মতো অপরাধ কমে যাবে। নিশ্চিত হবে নাগরিকদের যাতায়াতজনিত নিরাপত্তা।