শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ওষুধের দাম বৃদ্ধি দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

  ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ওষুধের দাম বৃদ্ধি দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

কোনোভাবেই জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের দাম কমছে না বরং দফায় দফায় বাড়ছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই, এমন অজুহাতে ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিভিন্ন ওষুধের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। রোগীদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সবাইকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিক্রেতাদের দাবি, দেশের ওষুধ কোম্পানি তাদের দোকানে ঠিকমতো ওষুধ সরবরাহ করছে না। এ ছাড়াও ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে একের পর এক ওষুধের দাম বাড়িয়ে চলছে কোম্পানিগুলো। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ওষুধের দাম বেড়েছে বাজারে। এতে অন্যান্য খরচের পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়ছে নাগরিকদের। কিছু অসংক্রামক রোগ আছে, সেগুলোর জন্য রোগীকে সারা বছরই নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। বিশেষ করে হৃদরোগ, ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগীদের সারা বছরই ওষুধের ওপর চলতে হয়। ওষুধের মূল্য বৃদ্ধিতে এসব রোগীর ওপর খরচের চাপ বেড়েছে আরেক দফা। ডলারের দাম বাড়ার প্রভাবে ওষুধের কাঁচামাল আমদানির ব্যয় বেড়েছে। তবে ওষুধের দাম বাড়ার পেছনে আগ্রাসী বাণিজ্য ও চিকিৎসকদের কমিশন দেওয়ার প্রবণতাও দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওষুধের মোট বাজারের ২৯ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে প্রমোশনাল খাতে। এই ব্যয় মানুষের ঘাড়ে চাপছে। বাণিজ্যিক পণ্যের দাম বাড়বে। তবে ওষুধ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মতো না। ওষুধের বাজার শতভাগ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে এবং প্রতি বছর যৌক্তিকভাবে দাম সমন্বয় করতে হবে। এটি করা গেলে আগ্রাসী বাণিজ্য বন্ধ হবে এবং প্রমোশনাল ব্যয় অনেক কমবে।

ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী, দেশে স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় হচ্ছে। এই অবস্থায় ওষুধের দাম বাড়লে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ব্যয় বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। দেশে ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন বলে মনে করে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজু্যমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বাজার নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। কয়েকটি কোম্পানি অনেক প্রভাবশালী। তাদের টপকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ঔষধ প্রশাসনের নেই। ওষুধের পেছনে বছরে গড় খরচ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। মাত্র ছয় ভাগ ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়া যায় সরকারি হাসপাতাল থেকে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণায় এসব তথ্য জানা গেছে।

আমরা মনে করি, নিয়মিত বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকলে ওষুধের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ওষুধ কেনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। এভাবে অযৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে লাগামহীন যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে তা হলে সাধারণ রোগী যারা স্বল্প আয়ের এবং প্রবীণ অবসরে আছেন তাদের অবস্থা কী হতে পারে। আমাদের প্রত্যাশা- অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে