শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

  ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই এটি যেমন আনন্দের তেমনি আশাব্যঞ্জক। দেশের ফুটবলের অগ্রতিতে এই বিজয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই প্রতীয়মান হয়। জানা যাচ্ছে, সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা। এই শিরোপা জয়ে আমরা জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। একইসঙ্গে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটিও কাম্য। উলেস্নখ্য, বুধবার আনফা কমপেস্নক্সে নেপালকে ৪-১ গোলে হারায় লাল-সবুজরা। এটাও স্মর্তব্য যে, এর আগেও ফাইনাল খেললেও অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে এটিই বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা; অন্যদিকে, নেপালের বিপক্ষেও প্রথম জয়। সঙ্গত কারণেই দেখা যাচ্ছে, এই টুর্নামেন্টে নতুন ইতিহাস গড়েছে মারুফুল হকের শিষ্যরা- যা অত্যন্ত সুখকর। এই ম্যাচে জোড়া গোল করেন বাংলাদেশ দলের মিরাজুল ইসলাম।

লক্ষণীয় যে, এবারের আসরে গ্রম্নপ পর্বে এই নেপালের বিপক্ষেই হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ফলে, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বুধবার ফাইনাল ম্যাচে একদিকে শিরোপা জয়ের ক্ষুধা যেমন ছিল, তেমনিভাবে ছিল নেপালের বিপক্ষে প্রতিশোধের ম্যাচও। তাই ফাইনালের জয়ে মধুর প্রতিশোধও নেওয়া হলো বাংলাদেশের। শ্রীলংকাকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রম্নপ পর্ব শুরুর পর নেপালের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে গ্রম্নপ রানার্সআপ হয়েছিল তারা। ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-২০ ক্যাটাগরির আসরে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেমিফাইনালে তাদের টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে উঠে আসে বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে। দেখা যায়, বুধবার ফাইনাল ম্যাচে শুরুতে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ; কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আধিপত্য বাড়তে থাকে নেপালের। অষ্টম মিনিটে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের বিপক্ষে দুটি সেভ করা গোলরক্ষক আসিফ হোসেন। বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে নিরাজন ধামীর দূরপালস্নার শট অনেকটা লাফিয়ে আঙুলের টোকায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে বের করে দেন আসিফ। ষোড়শ মিনিটে সতীর্থের থ্রম্ন পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন সমীর তামাং, তবে রাজীব হোসেন ছুটে গিয়ে দারুণভাবে ক্লিয়ার করেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নিতে পারেননি সমীর। ৩০তম মিনিটে নিরাজনের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মিরাজুলের দৃষ্টিনন্দন গোলে বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। মিরাজুলের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে পড়া জয়রথ শিখের গস্নাভস ফাঁকি দিয়ে পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে লুটোপুটি খায়। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দেখা যায়, দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে মিলে যায় ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোল। আসাদুল ইসলাম সাকিবের লং পাসে দূরের পোস্টে থাকা আসাদুল মোলস্নার হেড পাস থেকে হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন মিরাজুল। ম্যাচের ভাগ্য হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ৭০তম মিনিটের গোলে বাংলাদেশের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। বক্সের ভেতর থেকে মিরাজুলের ছোট পাশ ধরে জায়গা বানিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাব্বী হোসেন রাহুল। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রাব্বীর আড়াআড়ি পাসে নোভার শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দেওয়ার পর এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন, কিন্তু এর আগেই বল পেরিয়ে যায় গোললাইন। নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। আমরা বলতে চাই, এর আগেও ফাইনাল খেললেও যখন অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ে এটিই বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা তখন এটি যেমন আনন্দের তেমনি প্রেরণারও, নেপালের বিপক্ষেও প্রথম জয়। সঙ্গত কারণেই এই টুর্নামেন্টে যে নতুন ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশের যুবারা তা সামনে রেখে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাবে এমনটি কাম্য।

সর্বোপরি বলতে চাই, সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা- এই বিজয় অত্যন্ত আনন্দের এবং সুখকর। আগামী দিনের জন্যও অনেক বেশি প্রেরণার। সঙ্গত কারণেই এই বিজয়কে সঙ্গে নিয়ে আগামী দিনগুলোতে দেশের ফুটবল আরও অগ্রসর হবে এবং জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টরাও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বজায় রাখবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে