বন্যা পরিস্থিতি সঠিক উদ্যোগ জরুরি
প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১১ জেলায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন। ২৫ আগস্ট রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, বন্যায় বেশি আক্রান্ত জেলা হচ্ছে ফেনী, কুমিলস্না, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ৭৩ উপজেলা বন্যাপস্নাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন বা পৌরসভার সংখ্যা ৫৪৫টি। বন্যায় মৃত লোকসংখ্যা ১৮ জন (কুমিলস্না-৪, ফেনী-১, চট্টগ্রাম-৫, নোয়াখালী-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, লক্ষ্ণীপুর-১ ও কক্সবাজার ৩ জন)। পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জন লোক এবং ২২ হাজার ২৯৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য মোট ৭৪৮টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলে বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগে দুধ, ডিমের প্রায় ৪১১ কোটি টাকা এবং অবকাঠামোসহ অন্যান্য ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বলেও উলেস্নখ করেছেন তিনি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর, দীঘি, খামারের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৯৯টি, মাছ ও চিংড়ির ক্ষতির পরিমাণ ৯০ হাজার ৭৬৮ টন।
ত্রাণের জন্য চারদিকে হাহাকার। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য গত তিন দিনে ৪৪ ট্রাক ত্রাণ ও ২০ হাজারের বেশি রিলিফ প্যাকেজ পাঠিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর মধ্যে গত শনিবার ১৯ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী ও ২০ হাজার রিলিফ প্যাকেজ বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশের মানুষ যে যার সাধ্যমতো সাহায্য করছে। সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট দূর করতে হবে। আশার কথা, দেশের বন্যা উপদ্রম্নত পাঁচ জেলার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
উজানের টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দেশের পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। এ ছাড়া সমাজে যারা ধনাঢ্য তাদের এগিয়ে আসতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বানভাসিদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহসহ মানবিক তৎপরতা চালাতে হবে। মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য এই অমীয় বাণী প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।