পাঠক মত

সাময়িক সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান আত্মহত্যা নয়

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আত্মহত্যার পেছনে কারণ হিসেবে দেখা যায় পারিবারিক সমস্যা, লেখাপড়ার অতিরিক্ত চাপ, আর্থিক সমস্যা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, প্রেমে ব্যর্থতা, একাকিত্ব, হীনম্মন্যতা, স্বপ্নভঙ্গ ইত্যাদি। আত্মহত্যার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ পারিবারিক সমস্যা। ছেলেমেয়ে ভালো রেজাল্ট, ভালো কলেজ, ভার্সিটি, মেডিকেলে চান্স না পেলে তাদেরকে কটু কথা বলা, আত্মীয়স্বজনের সামনে হেয়প্রতিপন্ন করা, কখনো বা তাদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়ে মানসিক চাপের সৃষ্টি করা হয়। একবারও ভাবা হয় না জীবনটা তো তাদের। স্বপ্ন ভঙ্গ তো হয়েছে ওদের। বর্তমানে বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়ের কথা চিন্তা করার আগে চিন্তা করেন সমাজের কথা। ভাবেন কীভাবে সমাজের সামনে মুখ দেখাবেন? সমাজকে না বুঝে আপনার ছেলেমেয়ের জায়গায় নিজেকে বসে তাদের একটু বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার ছেলেমেয়েকে সাহস জোগান। সহযোগিতা করুন মানসিক বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসতে। ভবিষ্যতে ভালো করা জন্য উৎসাহিত করুন। নতুবা আত্মঘাতী হওয়ার পরে কান্নাকাটি করে কোনো লাভ নেই! আবার কখনো কখনো দেখা যায়, মেয়েদের বিয়ে নিয়ে বাবা-মা চাপ সৃষ্টি করে। যার কারণে মেয়ে মানসিক অশান্তিতে ভোগে। ফলস্বরূপ না পারে ঠিক মতো লেখাপড়া করতে আর না পারে জীবনের স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্নকে মাটিচাপা দিতে। আর যদিও বা বিয়ে করে নেয়, এরপর নতুন পরিবারে মানিয়ে উঠতে হিমশিম খায়। শ্বশুরবাড়ি লোকের অসৌজন্যমূলক আচরণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়। আর এই দীর্ঘ সময় মানসিক চাপ সহ্য করতে করতে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। মেয়েকে নিজের মতো বাঁচতে দিন। তাকে বাঁচতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে উৎসাহিত করুন। যেহেতু, আমাদের লেখাপড়ার জন্য বেশিরভাগ সময় কাটে আমাদের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, সেহেতু আত্মহত্যা প্রতিরোধে বন্ধুবান্ধব অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ আমাদের মনের যত সব আবেগ, অনুভূতি নিঃসংকোচে বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে থাকি। তাই বন্ধুর বলা সমস্যাগুলোকে সব সময় হেলায়-ফেলায় উড়িয়ে না দিয়ে একটু গুরুত্ব দিয়ে শুনবেন। তাকে সময় দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে সহযোগিতা করুন। আত্মহত্যাকারীর বেশির ভাগ মানুষই একাকিত্বতে ভোগে। সেহেত,ু তাদের একটু সময় দিয়ে, তাদের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে, তাদের কাছে টেনে যত্নে করে জীবনের গুরুত্ব বোঝালে হয়ত বেঁচে যেতে পারে একটা সম্ভাবনাময় প্রাণ। আপনার দেওয়া এই স্বল্প সময় বাঁচাতে পারে আত্মহত্যাকারীকে, তাদের জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাই অবহেলায় নয়, বরং গুরুত্বের সঙ্গে সমস্যাগুলো বিবেচনা করতে হবে কেননা সাময়িক সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান আত্মহত্যা নয়। উপদেশ দিয়ে নয়, বরং বন্ধুর মতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আত্মহত্যাকে আমরা সবাই প্রতিরোধ করতে পারি। জিন্নাতুন নেসা (শান্তা) শিক্ষার্থী যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়