দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে এডিস মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০ জনের মৃতু্য হলো। এছাড়া একদিনে ডেঙ্গু নিয়ে আরও ২৯৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৮৬ জন। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৯৫ রোগী ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে। অপর দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ৭২ জন, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ৪২, খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৯, বরিশালের হাসপাতালে ২৮ ও ময়মনসিংহের হাসপাতালে ৭ জন এবং রাজশাহী ও রংপুরের হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে গত বুধবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৩৬১ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এদিকে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৬ জনের মৃতু্য হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ও ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ। এ সময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৪৭ জনের মৃতু্য হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে।
মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। সঠিক উদ্যোগের অভাবে দিন দিন এডিস মশার উৎপাত বেড়েছে।
আমরা বলতে চাই, ডেঙ্গুসংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই।
এডিস মশা যেহেতু প্রধান বাহক সেহেতু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য এডিস মশা জন্ম ও বৃদ্ধি রোধ করতে হবে। বাসা বাড়িতে যাতে দীর্ঘদিন পানি জমে না থাকে, বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। এব্যাপারে দুই সিটি করপোরেশনের নজরদারি বাড়াতে হবে।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বিবেচনায় রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব কমবে না। যেহেতু এডিস মশা সংক্রমিত মশা। এতে এক রোগী থেকে অন্যজন সংক্রমিত হয়ে থাকে। তাই সংশ্লিষ্টদের সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ডেঙ্গুসংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেভাবে ডেঙ্গু আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে তা আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পিত উদ্যোগ অপরিহার্য।