বাংলাদেশ নিয়ে গুজব প্রতিহত করতে হবে

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে 'হিন্দু গণহত্যা' চলছে দাবি করে অনেক ভিডিওগুলো শেয়ার করা হচ্ছে। যারা এসব শেয়ার করছেন, তাদের অগ্রভাগে রয়েছে উগ্র ডানপন্থিরা। বিবিসির তথ্য যাচাই বিভাগ 'বিবিসি ভেরিফাই' এবং 'গেস্নাবাল ডিসইনফরমেশন টিম' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন সব ভিডিও যাচাই করতে গিয়ে দেখেছে যে, সেগুলো ভুয়া খবর। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সম্প্রতি বাংলাদেশে বড় ধরনের বিক্ষোভে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন। আন্দোলন চলাকালে সহিংসতায় বাংলাদেশের ছয় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির নেতাকর্মীদের অনেকে হামলার শিকার হয়েছেন- যাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম উভয়ই রয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অতি ডানপন্থি (হিন্দুত্ববাদী) দলের নেতাকর্মীরা ওইসব হামলার ঘটনাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মনে করেন ফ্যাক্ট চেকাররা। ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, 'বাংলাদেশের ইসলামপন্থিরা' একটা মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, ভিডিওটি আসলে চট্টগ্রামের। সেখানে 'নবগ্রহ মন্দিরে'র পেছনে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নামে দুটি সংগঠন দাবি করেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের অর্ধ শতাধিক জেলায় সংখ্যালঘু মানুষের ওপর দুই শতাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চাই। বাংলাদেশের চেয়ে সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এটি আমরা অবশ্যই দাবি করতে পারি। আমাদের আশপাশের দেশগুলোর দিকে তাকালে এর প্রমাণ মিলে। বাংলাদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল নজির, যেখানে সব ধর্মের লোক যুগ যুগ ধরে শান্তিতে বসবাস করে আসছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে প্রশংসিত। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলাদেশে চমৎকার একটা পরিবেশ বিরাজ করছে বহু বছর ধরে। সবার মাঝে গড়ে উঠেছে ভাতৃত্বের বন্ধন। ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবাই দেশের স্বাধীনতার জন্য '৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, ঢেলে দিয়েছিল বুকের তাজা রক্ত। মুসলমানরা বিপদে হিন্দুদের আশ্রয় দিয়েছে, প্রাণ বাঁচিয়েছে। এ দেশে ঈদ পূজা পাশাপাশি পালিত হয়। এই দুই উৎসব এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিদেশ থেকে যারাই এসেছেন তারা আমাদের এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশংসা করেছেন। এমন নজির পৃথিবীতে বিরল। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বহু বছর ধরে প্রশংসিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক বিশ্বে। সুতরাং, গুজব ছড়িয়ে যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের প্রতিহত করতে হবে।