শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

ছাত্র আন্দোলনে ৬৫০ জন নিহত

আমাদের শোক ও সমবেদনা
  ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ছাত্র আন্দোলনে ৬৫০ জন নিহত

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সরকার পতন কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এই সময়কার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন। নিহতদের মধ্যে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪০০ কাছাকাছি মারা গেছেন। বাকি প্রায় ২৫০ জন পাঁচ ও ৬ আগস্ট নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশের পালাবদল মানবাধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এক ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা এবং যারা এর শিকার তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই মূল কাজ। পরিস্থিতি উত্তরণে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। এই প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও বিস্তৃত পরিসরে তদন্তের কথা উলেস্নখ করেন তুর্ক। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে মধ্য জুন থেকে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তত ৩২ শিশুসহ শত শত মানুষ হতাহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার পরিস্থিতিও বর্ণিত হয়েছে রিপোর্টে। এখনো আহত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় অনেকেই কাতরাচ্ছে। এদের যথাযথ সুচিকিৎসা প্রয়োজন।

এই আন্দোলনে প্রকৃতপক্ষে কতজন হতাহত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে হবে। নিহতদের অনেকের পরিবারই প্রান্তিক শ্রেণির। তাদের আর্থিক সহায়তা অথবা চাকরির সহায়তা দিতে হবে। আর যারা আহত হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে- যারা হতাহত হয়েছে তারা আমাদেরই সন্তান। এতগুলো তাজাপ্রাণ ঝরে গেল, কল্পনাও করা যায় না। হতাহতদের জন্য রইলো আমাদের শোক ও সমবেদনা।

এটা সত্য বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সংঘাত দমনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে 'অপ্রয়োজনীয়' ও 'অসামঞ্জস্যপূর্ণ' বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। ওই আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচু্যত হন। শেখ হাসিনা আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে গত সপ্তাহে হেলিকপ্টারে করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যান। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়। পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী সে সময় প্রায়ই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা উভয় ক্ষেত্রেই নির্বিচারে বল প্রয়োগ করেছে। রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের পাশাপাশি পাখি শিকারে ব্যবহৃত অস্ত্র, বুলেটসহ নানা রকম প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর ফলে, চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। মানবাধিকার সুরক্ষাকে শক্তিশালী করে একটি সফল উত্তরণের পথে এই সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন নজিরবিহীন মর্মন্তুদ ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে রাষ্ট্রকেই সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে