শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

ট্রেন চলাচল শুরু নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

  ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ট্রেন চলাচল শুরু নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক

আন্দোলন, সহিংসতা আর ক্ষমতার পটপরিবর্তনে অস্থির সময় পেরিয়ে সারাদেশে আবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে জানা গেল, মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকেই। মঙ্গলবার শুরু হয়েছে লোকাল, কমিউটার, মেইল ট্রেন চলাচল। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে সব ধরনের আন্তঃনগর ট্রেনও যাত্রী পরিবহণ করবে বলে জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, গত রোববার রেল ভবনে এক সভায় ট্রেন চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। আর আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয় সোমবার বিকাল ৫টা থেকে। ফলে যখন ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়টি জানা যাচ্ছে, তা আমলে নিয়ে সার্বিকভাবে ট্রেন যাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, যাত্রীদের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ট্রেনের ভূমিকা অপরিসীম। সঙ্গত কারণেই ট্রেন চলাচল যখন শুরু হলো তখন তা ইতিবাচক। এক্ষেত্রে ট্রেন চলাচলের সার্বিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ট্রেন যাত্রা সুষ্ঠু ও যথাযথ করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য। উলেস্নখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও ময়মনসিংহ, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হয়। তাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরদিন ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে ১৮ জুলাই 'কমপিস্নট শাটডাউন' কর্মসূচির দিন সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সেদিন দুপরের পর দেশের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের সব যাত্রা বাতিল ঘোষণা করা হয়। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৫ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে ট্রেন চালুর পরিকল্পনার কথা জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু সেদিনও কোনো ট্রেন চলাচল করেনি। সেদিন রেল ভবনে এক বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু দুদিন চলার পর ৩ অগাস্ট শনিবার ফের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আমরা বলতে চাই, যখন ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়টি সামনে আসছে তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া দরকার, ট্রেন চলাচলকে কেন্দ্র করে এর আগে, নানা সময়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযাগ উঠে এসেছে। সেগুলো বিবেচনায় রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালে মাঝেমধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনার চিত্র পরিলক্ষিত হয়- যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনার। বিশেষ করে অরক্ষিত রেলক্রসিং এবং এর ফলে রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। ফলে সার্বিক বিষয় আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক পদক্ষেপ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। এ কথাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যাত্রাপথ সহজ করতে সঠিক ব্যবস্থাপনা যেমন জরুরি, তেমনি দুর্ঘটনা রোধসহ নিরাপত্তার বিষয়টিও অগ্রগণ্য। সঙ্গত কারণেই অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের বিষয়টি আমলে নেওয়াসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। কীভাবে আরও সহজ ও সঠিকভাবে ট্রেন চলাচল ও যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সেটিকে আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সারাদেশে আবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বলে যখন জানা যাচ্ছে, তখন তা আমলে নিয়ে, যাত্রাপথের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। রেল যাত্রা আরও সহজ ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের অনিয়ম অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে