চালের বাজার স্থিতিশীল দাম কমাতে হবে
প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
অনেকেই ভেবেছিলেন নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর চালের দাম কমে আসবে। দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। দেশের নিত্যপণ্যের বাজারে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়লেও কমেনি চালের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, আগের মতোই মিনিকেট ৭০-৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫৮ টাকা, মোটা চাল ৫২ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও দেশি বাসমতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। কোথাও কোথাও ১০০ টাকা। ডিমের দামও কমেনি। ডিমের হালি ৬০ টাকা, ডজন ১৭০ টাকা। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে মূল্যতালিকা ছড়িয়ে পড়েছে, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার।
আমরা মনে করি, দেশে উৎপন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সব পর্যায়েই মনিটরিং থাকতে হবে- যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াতে না পারে। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল যেসব সংস্থা আছে, সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মৌসুম শেষে উচ্চ দরে চাল বিক্রি করে প্রচুর পরিমাণে লাভ করার যে হীন প্রবণতা তা বন্ধ করতে হবে। এ প্রবণতা রোধে সরকারি গুদামে সব সময়, বিশেষ করে সেপ্টেম্বর-নভেম্বর এবং মার্চ-এপ্রিলে চালের মজুত সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখতে হবে। একই সঙ্গে চালকল মালিক, চাল ব্যবসায়ী এবং বড় কৃষক যেন চাল মজুত সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ মেনে চলেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে মোট চাল উৎপাদনের ৪০ শতাংশ হয় আমন মৌসুমে। চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। মোট ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর ধানের আবাদ করা হয়েছে। চাল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৩ হাজার টন। গড় ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ২ দশমিক ৯৮ টন। এবার আমনে উৎপাদন হয়েছে সর্বোচ্চ।
বিআইডিএসের এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাদ্যমূল্যস্ফীতি বাড়লে ৭৩.৮ শতাংশ হতদরিদ্র পরিবারই চালের ভোগ কমিয়ে দেয়। দরিদ্র পরিবারের বেলায় এ হার ৬৬ শতাংশ। তাই চালের দাম উচ্চহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিগরিব ও গরিবদের খাদ্যনিরাপত্তা পড়ে চরম হুমকির মুখে।
শুধু গরিব ও অতিগরিবরা নয়, চালের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরাও, বিশেষ করে যাদের আয় নির্দিষ্ট। চালের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের আমিষ জাতীয় খাবার কেনা অনেকটা কমিয়ে দিতে হয়। এতে তাদের পরিবারে, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের পুষ্টির অভাব ঘটে। অবনতি হয় তাদের স্বাস্থ্যের।
এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে তা সফল হয়নি। আমরা মনে করি, নতুন সরকারের পদক্ষেপ হওয়া উচিত বাজার তদারকি, অভিযান, মোবাইল কোর্টে জরিমানা। তা হলেই চালের দাম কমে আসবে।