অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকায় ফিরে তার প্রথম বক্তৃতাতেই বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাই হবে তার প্রথম কাজ। কারও ওপর কোনো হামলা যাতে না হয় সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি তিনি বলেছেন, 'আমার ওপর আস্থা রাখুন।' তিনি ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানকে 'দ্বিতীয় স্বাধীনতা' হিসেবে উলেস্নখ করে বলেছেন, 'এ স্বাধীনতা আমাদের রক্ষা করতেই হবে।' গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরেন ড. ইউনূস।
এ কথা সত্য সরকার পতনে পুলিশ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর ডাকাত আতঙ্কে বুধবারও নির্ঘুম রাত কেটেছে ঢাকার অনেক এলাকার বাসিন্দাদের। ঢাকার এ মাথা থেকে ও মাথা, উত্তরা থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত এ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাতভর ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রম্নপে পোস্ট লিখে, লাইভ করে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়েছেন আতঙ্কিত বাসিন্দারা। আবার মোহাম্মদপুর, উত্তরার অনেক এলাকায় দল বেঁধে পাহারা দিয়েছেন এলাকাবাসী। মসজিদের মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছিল। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতে এলাকাবাসী দল বেঁধে লাঠিসোঁটা হাতে রাস্তায় পাহারা দিতে নেমে যান। তাদের সঙ্গে স্থানীয় মাদ্রাসার শখানেক ছাত্রও এলাকা পাহারা দিতে নামে। সারারাত পাহারা দিয়ে ভোরে তারা ঘরে ফিরে যান। ডাকাতের আতঙ্ক ছড়িয়েছে ধানমন্ডি, শংকর ও মিরপুর এলাকায়ও। মিরপুর সেনানিবাস সংলগ্ন ইসিবি চত্বরে ডাকাতরা একটি ভবনে হামলা করেছে বলে অনেকে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও করতে থাকেন। ভিডিওগুলোতে শুধু হইচই আর সেনা টহলগাড়ির সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। ডাকাতরা হামলা করেছে বা আসছে রাতভর ফেসবুকে এমন পোস্ট দিয়েছেন অনেকে। আবার একযোগে ঢাকা শহরে এত ডাকাত কোত্থেকে এল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। এটা নিছকই আতঙ্ক কি-না সে প্রশ্নও তারা করছেন। মানুষের মধ্যে মারাত্মক নিরাপত্তা ভীতি লক্ষণীয়। খুব অসহায়বোধ করেছে রাজধানী ঢাকার মানুষ।
এ ছাড়াও সারাদেশে সম্প্রীতি কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি, উপাসনালয়সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকার ধামরাই, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, শরীয়তপুর ও ফরিদপুরে হিন্দুদের মন্দিরে এবং যশোর, নোয়াখালী, মেহেরপুর, চাঁদপুর ও নাটোর, খুলনায় বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এই নতুন সরকারের উচিত হবে দ্রম্নত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন সাধন করা। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এর কোনো বিকল্প নেই।